|
|
|
|
বিজেপিকে এক দিনেই চিন্তায় ফেললেন প্রিয়ঙ্কা |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি
৮ জানুয়ারি |
নতুন বিড়ম্বনা আম আদমি পার্টি তো ছিলই, এ বার তাদের ধন্দে ফেলে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা। ফলে লড়াইটা এ বার ঠিক কার সঙ্গে হতে চলেছে এই প্রশ্নের গোলকধাঁধায় এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গেরুয়া শিবির।
দিল্লি জয়ের পর আপ এখন গোটা দেশের নানান প্রান্তে শাখা-প্রশাখা ছড়াচ্ছে। তার মোকাবিলা করতে জনসংযোগ বাড়াতে নতুন উদ্যমে ঝাঁপানোর নির্দেশ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তবে মূল প্রতিপক্ষ হিসেবে রাহুলকেই সামনে রেখে চলছে তাঁর দল। ফলে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁর দশ বছরের ইনিংসে ইতি টানার কথা জানিয়ে দেওয়ার পরে অপেক্ষা এখন রাহুলের অভিষেকের। কিন্তু হঠাৎ করে দাদার বাড়িতে গিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার বৈঠক চেনা অঙ্কটা বেশ খানিকটা ঘুলিয়ে দিয়েছে। গোটা বিজেপি শিবিরের নজর এখন দশ জনপথে। কার নাম ঘোষণা করবেন সনিয়া গাঁধী? তিনি কি ছেলের নাম ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে? রাহুল তো তা-ও চেনা অঙ্ক। কিন্তু যদি প্রিয়ঙ্কাও সক্রিয় হন, তাঁর মোকাবিলা করা হবে কোন কৌশলে?
তবে বিজেপি-র মূল আশঙ্কাটি ভিন্ন। দু’মাস আগেও দেশ জুড়ে যে মোদী হাওয়া ছিল, সেই হাওয়াতেই এখন ভাগ বসিয়েছেন কেজরিওয়াল। মোদী জানেন, আসন সংখ্যা দু’শোর উপরে নিয়ে যেতে গেলে মোদী-ঝড় তোলা জরুরি। যাঁরা পরিস্থিতি বা হাওয়া বুঝে ভোট দেন, তাঁদের সমর্থনও পেতে হবে। কিন্তু তাঁদের ভোটে আপ থাবা বসালে বড় ক্ষতি মোদীর। বিজেপি নেতারা এ-ও বুঝতে পারছেন, মোদীকে দুর্বল করার জন্যই আপ-কে ঘিরে আবেগকে কংগ্রেস কাজে লাগাতে চাইছে। যে কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আপ-এর সঙ্গে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
তবু বিজেপি-র আশা, মনমোহন-উত্তর পর্বের জন্য নেতা ঘোষণার ক্ষেত্রে কংগ্রেস এখন কিছুটা সময় নিলেও এক বার বিষয়টি স্থির হয়ে গেলে তারা কেজরিওয়ালের জন্য জমি ছাড়বে না। বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা বলেন, “কংগ্রেস যদি রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করে, তারা কি চাইবে কেজরিওয়াল দিল্লির মতো লোকসভা ভোটে মোদীর থেকে রাহুলেরই বেশি লোকসান করুন?” ওই বিজেপি নেতার বিশ্লেষণ, কংগ্রেস বরাবরই চায় আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি ক্ষয় হোক।
বিজেপি গোড়া থেকেই এ বারের লোকসভা ভোটে মোদী বনাম রাহুলের লড়াইয়ে পরিণত করতে চাইছে। কংগ্রেসই এখনও রাহুলের নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে উঠতে পারেনি। ১৭ তারিখ এআইসিসি অধিবেশনেও যদি তা না করা হয়, তাতেও বিজেপি-র লাভ। তারা প্রচার করতে পারবে, মোদীর সঙ্গে টক্কর নেওয়ার ভয়ে রাহুলের নাম ঘোষণা থেকে পিছিয়ে এল কংগ্রেস। যদি নাম ঘোষণা হয়ও, তাতে ‘চেনা’ রাহুলকে মোকাবিলা করা কঠিন হবে না বলে মনে করছে বিজেপি।
কিন্তু বিজেপি-র কাছে সব চেয়ে আশঙ্কার, যদি রণক্ষেত্রে প্রিয়ঙ্কাকে সামনে এগিয়ে দেন সনিয়া! রাজীব-তনয়াই দলের শেষ তুরুপের তাস। বরাবরই তাঁকে আস্তিনে লুকিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। স্বামী রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তাতে প্রিয়ঙ্কার নাম জড়ায়নি। অনেকে ইন্দিরা গাঁধীর ছায়া দেখতে পান তাঁর মধ্যে। অনায়াস দক্ষতায় মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারেন প্রিয়ঙ্কা। ফলে তিনি সামনে এলে বদলে যেতে পারে ছবিটাই। এ হেন প্রিয়ঙ্কা যে ভাবে কাল রাহুলের বাড়িতে তাঁর অনুপস্থিতিতে দলের নেতাদের ডেকে বৈঠক করেন, তাতে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। লোকসভা ভোটে শেষ পর্যন্ত কার সঙ্গে লড়াই হবে, তা নিয়ে তাই বিজেপি ধোঁয়াশায়। কংগ্রেসের চাল দেখেই পাল্টা নীতি তৈরির অপেক্ষা করছেন মোদী। |
|
|
|
|
|