শহর থেকে আয়কর কমিশনারের অফিস তুলে দেওয়ার নির্দেশের প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভ দেখালেন আয়কর কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, যথেষ্ট কর আদায় সত্ত্বেও বর্ধমানের ওই অফিসটি তুলে দিয়ে সেটিকে কলকাতার অফিসের সঙ্গে মিশিয়ে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আয়কর দফতরের মোট চারটি অফিস রয়েছে জেলায়। তার মধ্যে দুর্গাপুরের সেন্ট্রাল অফিসের আওতায় রয়েছে বর্ধমান, দুর্গাপুর ও আসানসোলের আয়কর কমিশনারেট অফিস। ওই অফিসগুলির আওতায় রয়েছেন বধর্মান, বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার আয়করদাতারা। ওই চারটি অফিসের মধ্যে বর্ধমানের কমিশনারেট অফিসটিকে তুলে দেওয়া হবে, সঙ্গে দুর্গাপুর অফিসটিও কেন্দ্রীয় অফিস থাকবে না বলে কর্মীদের দাবি।
বর্ধমানের আয়কর কমিশনারেট দফতরের আধিকারিকদের দাবি, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে দিল্লির আয়কর ভবন থেকে বর্ধমানের ওই কমিশনারেট অফিসটিকে তুলে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়। প্রতিটি কমিশনারেট অফিসের আওতায় অন্তত ১ লক্ষ আয়করদাতা থাকার কথা। কিন্তু বর্ধমানের ওই অফিসের আওতায় মাত্র ৫০ হাজার আয়করদাতা রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে দিল্লির আয়কর ভবন থেকে। তাই ওই অফিসটিকে তুলে দিতে সুপারিশ করেছে জাতীয় আয়কর দফতরের রি-স্ট্রাকচারিং সংক্রান্ত সাব-কমিটি। |
তবে ইনকাম ট্যাক্স গেজেটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান ইউনিটের সম্পাদক অভিজিৎ মণ্ডল ও ইনকাম ট্যাক্স এমপ্লয়িজ অ্যাসেসিয়েশনের বর্ধমান ইউনিটের সম্পাদক জয়ন্ত চৌধুরীর দাবি, “বর্ধমান আয়কর কমিশনারেটের অধীনে লক্ষাধিক আয়কর দাতা রয়েছেন। গত ২০১২-১৩ সালে এই কমিশনারেটের আয়কর আদায়ের লক্ষমাত্রা ছিল ১৯ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছিল ৪২ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার কর। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ১১৬.৬ ভাগ বেশি। তবুও কিছু ভ্রান্ত সংখ্যাতত্বের উপরে ভিত্তি করে বর্ধমানের আয়কর কমিশনারেট বন্ধ করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ওই আয়কর সংক্রান্ত অফিসটি প্রায় ১৯৬২ সাল থেকে বর্ধমান শহরের রয়েছে। প্রায় ১০০ জন কর্মী কাজ করেন। তাঁদের দাবি, অফিসটিকে কলকাতার অফিসের সঙ্গে মিশিয়ে দিলে অন্তত ৩০-৩৫ জন কর্মী কাজ হারাবেন। অফিসটি সরে গেলে যে সমস্ত সংস্থা ৮০জি ভিত্তিতে আয়কর মুক্ত হয়ে কাজ করে তাদের হয়রান হতে হবে। হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে সাধারণ আয়করদাতাদেরও।
আয়কর কর্মীদের দুই ইউনিয়ানের নেতাদের দাবি, যে আয়কর এই রাজ্য থেকে আদায় হয়, তার শতকরা ৭৫ ভাগ রাজ্য সরকার পায় উন্নয়নের খাতে। তাই এই কর আদায়কারী অফিসটি যাতে উঠে না যায় তা দেখা উচিত রাজ্য সরকারেরও। তবে এই কর্মী বিক্ষোভ সম্পর্কে মন্তব্যে রাজি হননি বর্ধমান জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আয়কর অফিসের কর্মীরা আমাদের এই বিষয়ে কিছু জানাননি। ওঁরা যদি তা জানান, তাহলে আমরা ঘটনাটি নিয়ে খোঁজখবর করতে পারি।” |