ছাত্রী ভর্তি নিয়ে ঘেরাও মালদহের স্কুলে
ঞ্চম শ্রেণিতে আসন সংখ্যা ২৪০। অথচ ৩৪৩ ছাত্রীকে ভর্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে তিন শতাধিক অভিভাবক মালদহ শহরের বার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে বেশ কিছু অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষিকাকে মারতে উদ্যত হয়। ইংরেজবাজার থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী স্কুলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। বেলা ১১ টা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত টানা বিক্ষোভের পর স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি মেনে অভিভাবকদের তরফে সপ্তাহে তিন দিন ক্লাশে পাঠানোর মুচলেকা দেওয়ার পর ছাত্রীদের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করতে রাজি হন প্রধানশিক্ষিকা।
স্থানীয় বিধায়ক রাজ্যের পযর্টনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “সবাই ভাবছে বার্লো স্কুলে পড়লে মেয়ে ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার হবে। সমস্ত ছাত্রীকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়। আমি বলেছি স্কুলের এক কিলোমিটারের মধ্যে যাদের বাড়ি সেই ছাত্রীরাই বার্লো স্কুলে ভর্তি হতে পারবে। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ চেয়ারম্যান, সদর মহকুমা শাসক ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-কে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়টি দেখতে বলেছি।” শিক্ষা সংসদ চেয়ারম্যান স্বপন মিশ্র বলেন, “যেহেতু হাইস্কুল যুক্ত তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব ছাত্রছাত্রীকে সেই হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করা বাধ্যতামূলক। সেই জন্য এ বছর বার্লো বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির সমস্ত ছাত্রীদের হাইস্কুলে ভর্তি করা হচ্ছে। আগামী বছর থেকে আর হবে না।”
মঙ্গলবার বিক্ষোভ বার্লো উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
দুই বছর আগেও বার্লো বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রি-নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণির পর্যন্ত ছাত্রী সংখ্যা ছিল ১৬০। রাজ্য সরকার যে দিন ঘোষণা করে হাইস্কুল-যুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা সেই হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি সুযোগ পাবে, তার পরই নামীদামি হাইস্কুলযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির হিড়িক শুরু হয়। এই হিড়িকে বার্লো বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাত্রী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩০০। চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৪৩ ছাত্রী ভর্তি হয়েছে।
এতে বিপাকে পড়ে বার্লো বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণির তিনটি সেকশনে সর্বোচ্চ ২৪০ জন ছাত্রী ভর্তি সম্ভব। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত বছর ২৭০ জন ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছিল। এবছর ঠিক হয়েছিল ২৪০ জনের বেশি ভর্তি করা হবে না। কিন্তু এ বছর স্কুলের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাশ করা ৩৪৩ জন ছাত্রীকেই ভর্তি করার জন্য অভিভাবকেরা এই দিন বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভের জেরে এ দিন স্কুলে পঠনাঠন লাটে উঠে যায়। বিক্ষোভে দুপুর ২ টার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কাবেরী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “৩৪৩ ছাত্রীকে পঞ্চম শ্রেণিতে ক্লাশ নেওয়ার মতো ঘর নেই। কোথায় এত ছাত্রীর ক্লাশ নেব? জোর করে আমাদের উপর পঞ্চম শ্রেণিতে এই বিপুল পরিমানে ছাত্রীকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি অভিভাববকদের বলেছি, সপ্তাহে তিন দিন যদি ক্লাশ করাতে রাজি হন তবে আমি ৩৪৩ ছাত্রীকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করতে পারব।” স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক হিমাদ্রি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সরকার ক্লাশরুম তৈরি করে দিক। তা হলে ৩৪৩ কেন ৬০০ ছাত্রী ভর্তি করতে আমাদের আপত্তি নেই।” এ দিকে অভিভাবকদের দাবি, ৩৪৩ জন ছাত্রীকেই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিতে হবে। ভর্তি না নিলে আজ বুধবার থেকে লাগাতার আন্দোলন চলবে। পঞ্চম শ্রেণিতে সপ্তাহে তিন দিন করে ক্লাশ করানোর ব্যাপারে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশিস চৌধুরী বলেন, “আইনগত ভাবে এটা করা সম্ভব নয়। তবে স্কুলে এত ছাত্রী বসানোর ক্লাশ নেই। ছাত্রীদের তো ছাদে কিংবা খোলা মাঠে ক্লাশ নেওয়া সম্ভব নয়। তাই স্কুল ও অবিভাবকেরা যদি সপ্তাহে তিন করে ক্লাশ করানো সিদ্ধান্ত নেন তবে আমরা কী করতে পারি।” তবে এ ব্যাপারে রাজ্য শিক্ষা দফতরের অনুমোদন নেওয়া হবে কি না জানতে চাওয়া হলে আশিসবাবু বলেন, “এটা কখনও আইনগত ভাবে করা সম্ভব নয়। সুতরাং অনুমোদন চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.