এক বছর আগে নিতুড়িয়ার এক স্কুল ছাত্রের খুনের ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকেই নিহত ছাত্রের মোবাইল ফোন ও সাইকেল.উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে শ্বাসরোধ করার জন্য ব্যবহার করা মাফলারটিও উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতেরা হল নিতুড়িয়া থানার শালতোড় গ্রামের দিলীপ পাসোয়ান, দীপক হাড়ি, অশোক মল্লিক ও বিন্টু বাউরি। রবিবার বাড়ি থেকে দিলীপকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে তার তিন দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। তাকে জেরা করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধরা হয় বাকি তিন জনকে। এসডিপিও কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “দীর্ঘ তদন্তের পরে নিতুড়িয়ায় স্কুল ছাত্র খুনের ঘটনার কিনারা করা গিয়েছে। চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় তারা খুনের কথা স্বীকার করছে।”.
২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নিতুড়িয়ার দেউলি গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় শালতোড় হিন্দি হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র বজরঙ্গী উপাধ্যায় খুন হয়। খুনের পাঁচ দিন পরে হিজুলি গ্রামের কাছে একটি পরিত্যক্ত কুয়োর মধ্যে তার দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু পাওয়া যায়নি তার মোবাইল ফোন ও সাইকেলটি। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল শ্বাসরোধ করে খুন করে কুয়োর মধ্যে তার দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নিতুড়িয়ার ওই ছাত্র খুনের ঘটনায় কারণ সম্পর্কে স্থানীয় বা নিহতের পরিবারের কাছ থেকে কোনও তথ্য না পাওয়ায় দেরি হয়। আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করলেও রাতে বজরঙ্গী থাকত ওই আত্মীয়ের লোহার গুদামে। এখানেই সন্দেহ হয় পুলিশের সে বোধহয় কোনও অপরাধ দেখে ফেলেছিল। সে জন্যই তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। সম্প্রতি পুলিশের কাছে খবর আসে চার দুষ্কৃতী মদের আসরে ওই স্কুল ছাত্রের খুনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করছিল। তাঁদের মধ্যে দু’জন লোহা চুরি-সহ অন্য ছোটোখাটো চুরির কাজে যুক্ত। রঘুনাথপুরের এসডিপিও বলেন, “সোর্সের কাথে ওই খবর পেয়ে ওই চারজনের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়। সম্প্রতি ওই স্কুল ছাত্রের মোবাইলের আইএমআই নম্বর ট্র্যাক করে জানা যায় সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন সেই মোবাইলটি ব্যবহার করছে। ফলে তারা খুনের ঘটনায় জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়ার পরেই পর্যায়ক্রমে তাদের ধরা হয়।”
কিন্তু খুনের কারণ কী? এসডিপিও-র দাবি, ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে, ১০ ফ্রেব্রুয়ারি রাতে ওই চারজনে বজরঙ্গী যে গুদামে শুয়েছিল, সেখানে ওরা লোহা চুরি করতে ঢুকেছিল। চুরির ঘটনা বজরঙ্গী দেখে ফেলায় রাতেই দুষ্কৃতীরা বজরঙ্গীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। সাইকেলে দেহটি বয়ে নিয়ে পাথর বেঁধে অদূরে কুয়োতে ফেলে দেওয়া হয়। সাইকেলটি ফেলে দেওয়া হয় পাশের পুকুরে।” তবে এ দিন সন্ধ্যায় ধৃতদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা খুনের ঘটনায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছে।
|