এক ছাত্রীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে গ্রেফতার করা হল এক ছাত্রকে। ওই ছাত্র যার কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিল, সন্তু ঘোষ নামে সেই যুবককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর বাড়ি কৃষ্ণনগরের চ্যালেঞ্জ মোড় এলাকায়। তিনি বগুলার শ্রীকৃষ্ণ কলেজের ইংরেজি অনার্সের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। ধৃত ছাত্র পড়েন কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে। তরুণীর অভিযোগ, ওই ছাত্র বেশ কয়েক মাস ধরেই তাঁকে উত্ত্যক্ত করছিল। মঙ্গলবার পড়তে যাওয়ার পথেও তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। এমনকী ওই ছাত্র তাঁকে একটি সাদা কাগজে জোর করে সইও করিয়ে নিতে চায় বলে অভিযোগ। এর পরই মেয়েটির চিৎকারে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। আসে পুলিশও। ঘটনাস্থলেই পুলিশ ছাত্রটির কাছ থেকে দু’রাউন্ড গুলি-সহ একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী ছাত্রীর বাবা বলেন, “আজ সকালে মেয়ে বউবাজার এলাকায় এক গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল। সেই সময় ছেলেটি আমার মেয়েকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে একটি কাগজে জোর করে সই করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমার মেয়ে পালিয়ে যায়। সে পরে তার শিক্ষককে সবটা বলে। তিনি আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। আমি গিয়ে মেয়েকে নিয়ে আসি।’’ বেলা এগারোটা নাগাদ সেই তরুণী পোস্ট অফিস মোড় এলাকায় আবার অন্য এক শিক্ষকের কাছে পড়তে যাচ্ছিলেন। ওই ছাত্র তখন ফের তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরপরেই ওই তরুণীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ধৃত ছাত্রের বাবা গোয়াড়িবাজারের একটি দশকর্মার দোকানের মালিক। ওই ছাত্র পড়াশোনায় এবং খেলাধুলোয় ভাল বলেই শহরে পরিচিত। শহরের নামী ক্লাবের ক্রিকেট দলের কোচ বেনেডিক্ট গোমস বলেন, “আমি ওকে প্রায় সাত বছর ধরে দেখছি। ও এরকম করতে পারে, ভাবতেই পারছি না।” সন্তুর বাড়ি কালীনগর এলাকায়। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তার কাছ থেকে সতেরোশো টাকা দিয়ে ওই আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিল ধৃত ছাত্র। এ দিন সে ধরা পড়ার পরে পুলিশ তার মোবাইল থেকেই সন্তুকে ফোন করে টাকা মেটানোর টোপ দিয়ে ডেকে আনায়। জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, “সন্তু কোনও বড় চক্রের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। সন্তুর সঙ্গে এই ছাত্রের কী করে যোগাযোগ হয়েছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |