|
|
|
|
শৌচাগার গড়তে প্রচার সার, জরিমানার দাওয়াই পঞ্চায়েতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নির্মাণ করা নিয়ে এতদিন সচেতনতামূলক প্রচার চললেও বিশেষ কাজ হয়নি। এবার তাই শুধু প্রচার নয়, তার সঙ্গে যুক্ত হল জরিমানার দাওয়াই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়িতে শৌচাগার তৈরি না করলে গুণতে হবে ৫০০ টাকা জরিমানা। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দাসপুর-১ ব্লকের নন্দনপুর-১ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত গড়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ বলে তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি। তাদের বক্তব্য, শৌচাগার তৈরির জন্য সরকারি প্রকল্প রয়েছে। অর্থও দেবে সরকার। তাহলে কেন নিবিড় স্বাস্থ্য বিধান প্রকল্প কাযর্কর হবে না? পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কমলকৃষ্ণ সামন্ত বলেন, “সদিচ্ছার অভাবেই এখনও বহু পরিবারে শৌচাগার নেই। তাই দ্রুত কাজ করতেই আমরা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” |
|
পঞ্চায়েতে প্রচার।—নিজস্ব চিত্র। |
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নিবিড় স্বাস্থ্য বিধান প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই হল বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নির্মাণ। দীর্ঘদিন ধরে জেলা জুড়ে সরকারি ও বেসরকারি নানা সংস্থার উদ্যোগে এনিয়ে প্রচারও চলছে। তবে বাস্তবে চিত্রটা বদলায়নি। সূত্রের খবর,এখনও গ্রামাঞ্চলে প্রায় চল্লিশ শতাংশের বেশি পরিবারে শৌচাগার নেই। ফলে এখনও তাঁদের ভরসা স্থানীয় মাঠ-ঘাটই। এরফলে একদিকে যেমন এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, আবার তেমনি ওই সরকারি প্রকল্পে সাফল্যের হারও কমছে। নন্দনপুর -১ পঞ্চায়েত প্রধান লক্ষ্মী ঘোষ বলেন, “আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। সেজন্য বাড়ি বাড়ি প্রচার থেকে লিফলেট বিলি সবই করা হচ্ছে। চাপ বজায় রেখে কাজে দ্রুততা আনতে ৫০০ টাকা জরিমানা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি ওই সময়ের মধ্যে কেউ শৌচাগার তৈরি না করে, তাহলে আমরা জরিমানা করব।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখন নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্প এবং একশো দিনের কাজের মাধ্যমে শৌচাগার তৈরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে। তবে সেজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রথমে ৯০০ টাকা জমা দিতে হবে। শৌচাগার তৈরির বাকি টাকা সরকার দেবে। প্রশ্ন হল, এত প্রচার সত্ত্বেও কেন অধিকাংশ বাড়িতে শৌচাগার নেই? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রচারেই গলদ রয়েছে। সরকারি এই সুবিধার কথাও ভাল ভাবে জানানো হয়নি। অনেকেই এবিষয়ে না জানায় অবস্থারও কোন পরিবর্তন হয়নি।” তবে জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “বাড়ি বাড়ি শৌচাগার তৈরির জন্য আমরা জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছি। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত এবং ব্লক থেকে প্রচারের সঙ্গে লিফলেটও বিলি করা হচ্ছে।” নন্দনপুর-১ পঞ্চায়েত এলাকায় মোট জনসংখ্যা ১৪ হাজার ৩৮৮ জন। মোট পরিবার রয়েছে ৩০৩৮টি। তার মধ্যে দারিদ্র সীমার নীচে থাকা পরিবারের সংখ্যা ৬১২। সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতে এখনও ৬১০টি বাড়িতে শৌচাগার নেই। তাই ওই গ্রামকে নির্মল গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই উদ্যোগ নিয়েছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। মানুষকে সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি প্রচার, বাজারে সভা থেকে লিফলেট বিলি সবই চলছে জোরকদমে। পঞ্চায়েতের উপ প্রধান বলেন, “নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত তালিকায় নন্দনপুর-১ পঞ্চায়েতের নাম সংযোজন হতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রামে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারের মধ্যে যাঁদের শৌচাগার নেই তাঁদের কাছে ৯০০ টাকা নিয়ে আমরা শৌচাগার তৈরি করে দেব। আর আর্থিক দিকে দিয়ে সক্ষম পরিবারগুলিকে আমরা নিজে থেকেই শৌচাগার তৈরি করে নিতে অনুরোধ করছি।” |
|
|
|
|
|