হকি বিশ্বকাপের প্রায় সাড়ে চারমাস আগেই যুদ্ধ শুরু হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের সেরা আট দেশের। শুক্রবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে ওয়ার্ল্ড হকি লিগের ফাইনাল রাউন্ড। অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইংল্যান্ড-সহ আট দলের টুর্নামেন্টকে সব দেশই এখন দেখছে হকি বিশ্বকাপের মহড়া হিসেবে।
নেদারল্যান্ডসের কোচ পল ভানাস আবার টুর্নামেন্টে ভারতের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন। ধ্যানচাঁদ জাতীয় স্টেডিয়ামে টিমের প্র্যাকটিসের পর তিনি বলেন, “সেরা আট দল খেলবে। তাই কোনও ম্যাচই সোজা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। অন্য দেশের মধ্যে ভারতও বেশ শক্তিশালী টিম। আমার মনে হয়, ভারত এই টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে যাবে।” গ্রুপ ‘এ’-তে ভারতের লড়াই জার্মানি, ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। শুক্রবার ভারতের প্রথম ম্যাচ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। শুধু নেদারল্যান্ডসই নয়, অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন জার্মানির কোচ মার্কাস ওয়েইসও মনে করেন সর্দার সিংহদের মতো প্লেয়ার থাকায় ওয়ার্ল্ড হকি লিগে অনেক দূর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের।
তবে অন্য দেশের কোচ বা প্লেয়াররা যাই ভাবুন, খোদ ভারতের কোচ এম কে কৌশিক আবার অন্য সমস্যায়। চলতি মরসুমে ঠাসা টুর্নামেন্ট থাকায় দিশাহারা কৌশিক থেকে জাতীয় দলের হকি প্লেয়াররা।
মঙ্গলবার আর্জেন্তিনার সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচের পর জাতীয় কোচ কৌশিক আনন্দবাজারকে বলেন “এই বছরে সামনে প্রচুর টুর্নামেন্ট। তাই প্লেয়ারদের মতোই কোচেরাও বুঝতে পারছেন না কী করবেন। কারণ, হকি ইন্ডিয়ার কর্তারা আমাদের সরাসরি বলছে না কোন টুর্নামেন্টগুলোকে আমরা প্রাধান্য দেব। ওয়ার্ল্ড হকি লিগের পর এ বছর বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসের মতো চারটে বড় আসর। তার উপর রয়েছে হকি ইন্ডিয়া লিগ।”
কৌশিকের বক্তব্য, ক্রিকেটের আইপিএলের মতো হকি ইন্ডিয়া লিগেও টাকার ছড়াছড়ি, তাই সেখানে বছরের শুরুতেই নিজেদের সেরাটা দিয়ে ফেলবেন জাতীয় দলের প্লেয়াররা। “আর জাতীয় দলের প্লেয়ারদের ‘রিকভারি পিরিয়ড’ কাটিয়ে ওঠার আগেই তাদের নেমে পড়তে হবে বিশ্বকাপ খেলতে। এই টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরেই রয়েছে কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমস। তার পর আবার ভারতেই বসছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আসর। তাই সর্দার সিংহদের থেকে পুরো মরসুম জুড়ে সেরাটা আশা করাও অন্যায়,” বলেন মাইকেল নবসের জায়গায় মাস ছ’য়েক আগে পুরুষদের সিনিয়র দলের কোচের দায়িত্বে আসা কৌশিক। সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, “আসলে আমাদের জাতীয় দলের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি না বাড়ালে প্লেয়ারদের চোট-আঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়াটা নিশ্চিত। বিশ্ব হকিতে খেলা দেশগুলি বছরের শুরুতেই ঠিক করে নেয় গোটা মরসুমের সূচি। সেখানে হকি ইন্ডিয়ার তালিকায় তেমন কিছু নেই। জানি না এই অবস্থায় প্লেয়ারদের থেকে আমরা সেরাটা বার করতে পারব কি না!” |