ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই ছাত্র সংঘর্ষ কমার্স কলেজে
দিনক্ষণ আগেই চূড়ান্ত হয়েছে। সেই মতো এ বার বিজ্ঞপ্তি জারি হল। মঙ্গলবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। আজ, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা দুই মেদিনীপুরের সমস্ত কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি। অন্য দিকে, কলেজগুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে আগামী ২৮ জানুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ বিভাগের প্রধান জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “ছাত্র সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে করতে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
তবে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু ভাবে হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, মঙ্গলবার থেকেই ছাত্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এ দিন মেদিনীপুর কমার্স কলেজে ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি করে সিপি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দফতরের সামনে বিক্ষোভ চলে। সিপি’র অভিযোগ, নির্বাচন আসন্ন। তাই ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করছে টিএমসিপি। এ দিন দুপুরে আচমকাই টিএমসিপি’র কয়েক জন বহিরাগত কর্মী কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে সংগঠনের কর্মীদের মারধর শুরু করে। কেউ সিপি’র প্রার্থী হতে পারবে না বলে হুমকি দেয়। ৪ জন কর্মী প্রহৃত হন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র সংসদের সভাপতি অভিজিত্‌ দাস, সম্পাদক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। মেদিনীপুর কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদ সিপি’র দখলে রয়েছে। সিপি’র জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “টিএমসিপি প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। তাই বহিরাগতদের এনে অশান্তি তৈরি করছে। বহিরাগতদের হামলায় আমাদের ৪ জন জখম হয়েছেন।” টিএমসিপি’র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির পাল্টা দাবি, ছাত্র পরিষদের হামলায় তাঁদের এক কর্মী প্রহৃত হয়েছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিবেকানন্দ দাস মহাপাত্র অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
কে ডি কলেজে গণ্ডগোলের পর চলছে অবস্থান বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
বস্তুত, এক সময়ে দুই মেদিনীপুরের অধিকাংশ কলেজে এসএফআইয়ের ‘দাপট’ ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০১০ সালের নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরে যেখানে ১২টি কলেজের ছাত্র সংসদ ছিল এসএফআইয়ের দখলে, সেখানে ২০১১ সালে তা একধাক্কায় কমে হয় ২টি। অন্য দিকে, ২০১০ সালে যেখানে ৪টি ছাত্র সংসদ ছিল টিএমসিপি’র দখলে, পালাবদলের পর তা বেড়ে হয় ১৬টি। এক সময়ে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠত, এখন সেই সব অভিযোগ আরও বেশি করে উঠছে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। গড়বেতা, কেশপুরের মতো কলেজের পরিস্থিতিও রাতারাতি বদলে গিয়েছে। আগে এই সব কলেজ ‘সবাই এসএফআই’ বলে পরিচিত ছিল। আর পালাবদলের পর কলেজগুলো ‘সবাই টিএমসিপি’ বলে পরিচিত হয়েছে। তবে, মতবিরোধ থাকলেও এসএফআইয়ের মধ্যে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা তেমন ঘটত না।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪৫টি কলেজে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সবক’টি ছাত্র সংগঠন অবশ্য অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “আমরা চাই, অবাধ নির্বাচন হোক। ছাত্রছাত্রীরা নির্ভয়ে তাঁদের মতপ্রকাশ করুন।” তাঁর আশঙ্কা, বিশৃঙ্খলা তৈরি করে টিএমসিপি কর্মীরা বিভিন্ন কলেজে নির্বাচন বানচাল করতে পারে। ডিএসও’র জেলা সভাপতি দীপক পাত্রের মত, “শিক্ষা আজ সর্বাত্মক সঙ্কটে। এর প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক আন্দোলন যাতে গড়ে উঠতে না-পারে, শাসকদলের সংগঠন তার সব রকম চেষ্টা করে।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি অবশ্য বলেন, “প্রতিহিংসার রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরাও চাই ছাত্র সংসদের নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে হোক।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.