গ্রীষ্মের ঝাঁ ঝাঁ রোদ মাথায় গলদঘর্ম ট্রাফিক পুলিশকে দেখেই বিষয়টা মাথায় এসেছিল সৌরশক্তি বিশেষজ্ঞ শান্তিপদ গণচৌধুরীর। অবশেষে এই শীতে তার ফসল ফলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী গ্রীষ্মেই কলকাতার ট্রাফিক পুলিশের গায়ে চড়তে পারে গরমকে হার মানানো, ফুরফুরে হাওয়া খেলানো জামা। সৌরশক্তির অভিনব প্রয়োগের মাধ্যমেই এমন জামা-আবিষ্কারের কাজটা সারা গিয়েছে।
দক্ষিণ কলকাতার কালিকাপুরের একটি সংস্থার মাধ্যমে এই সোলার জামা তৈরির গবেষণা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা এস এন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস এই জামার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যেই কলকাতার একটি বস্ত্র সংস্থার সাহায্যে ওই জামা প্রস্তুত। ঝাড়খণ্ড-পশ্চিমবঙ্গের খনি এলাকায় প্রবল গ্রীষ্মে শ্রমিকদের একটু শান্তি দিতে এই জামার ব্যবহার নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। |
কলকাতা পুলিশের কর্তারাও গরমে দিনভর রাজপথে কতর্ব্যরত কর্মীদের সমস্যা নিয়ে অনেক দিনই ভাবনা-চিন্তা করছেন। সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে লালবাজারের কর্তাদের সঙ্গে এই জামা নিয়ে নিয়ে কথাও হয়েছে বলে জানান শান্তিপদবাবু। তাঁর দাবি, একটি বিমানসংস্থার সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ডস্টাফদেরও এমন জামা পরানো হতে পারে। তিনি বলেন, “বাইরের তাপমাত্রার থেকে অন্তত ৭-৮ ডিগ্রি কম থাকবে জামার ভিতরের তাপমাত্রা।”
জামার কাঁধে ও পিঠে বোতাম-আঁটা সোলার প্যানেল। ভিতরে তিন-চারটি করে ছোট পাখা। সৌরশক্তির মাধ্যমে পাখা চলবে। জামার পিছনে থাকছে বাতাস সঞ্চালনের এগজস্ট ফ্যানও। জামায় কোথায় কোথায় পাখা বসালে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য মিলবে তা নিরীক্ষার মাধ্যমেই ঠিক হয়েছে। বেশি গরমের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বেশি শক্তিশালী ব্যাটারি। বস্ত্র সংস্থাটি রংবেরঙের সুদৃশ্য ডিজাইনের জামাও তৈরি করেছে।
শান্তিপদবাবু জানিয়েছেন, কম-বেশি দেড় হাজার টাকা দাম হবে এক-একটি জামার। ভিতরের সাজসরঞ্জামের জন্য ব্যবহার করতে হবে কিছুটা সুবিধা। বাড়তি মজা হল, জামার পকেটে রাখা ‘জ্যাক’ দিয়ে ঘুরতে ঘুরতেই চার্জ দেওয়া যাবে মোবাইলে। |