দলীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, টেন্ডারে কারচুপির অভিযোগ তুলে তৃণণূলের উপপ্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যদের বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়াল। সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর ১২টা থেকে ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান শান্তনা হাঁসদা এবং দলের বাকি ৪ জন পঞ্চায়েত সদস্যের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত দফতরে প্রধান রাজেন মুর্মু-সহ অফিস কর্মীদের ঘেরাও করে রাখা হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভ আন্দোলনে এলাকার শতাধিক গ্রামবাসী সামিল হন।
পুলিশ গেলেও প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ধরে পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যে প্রধান ঘেরাও হয়ে থাকেন। শেষপর্যন্ত বিডিও গিয়ে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে তদন্তের আশ্বাস দিলে বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ উত্তেজনা কমে। তপনের বিডিও জর্জ লেপচা বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের অধীন ১০টি সংসদ এলাকায় মার্ক-টু নলকূপ এবং ১০টি কালভার্ট তৈরি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শান্তনা হাঁসদা, সদস্য বিনয় বর্মন, সুকুমার দেবনাথদের অভিযোগ, “আমাদের সই জাল করে গোপনে টেন্ডার করে ১০টি সংসদ এলাকায় প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০টি মার্ক টু নলকূপ বসিয়েছে বলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ হিসাব দেখিয়েছেন। পাশাপাশি, ওই ১০টি সংসদে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০টি কালভার্ট তৈরির টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলেও কাউকে কিছু জানানো হয়নি।” উপপ্রধান ও সদস্যরা বিডিওর কাছে সমস্ত অভিযোগ করেছেন
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বিডিও-র উপস্থিতিতে ফাইলপত্র পরীক্ষা করার সময় উপপ্রধান এবং সদস্যরা দাবি করেন, ওই সমস্ত কাজের জন্য সিদ্ধান্তের খাতায় তাদের সই জাল করা হয়েছে। ওই কাজে পঞ্চায়েত দফতরের একাংশ কর্মী জড়িত বলে তাঁদের সন্দেহ। এই প্রসঙ্গে প্রধান রাজেন মুর্মু বলেন, “নিয়মকানুন মেনেই অফিসের কর্মীরা টেন্ডার করেছেন। অনিয়মের অভিযোগ ঠিক নয়।” পঞ্চায়েতের কার্যনির্বাহী আধিকারিক জ্যোতিপ্রসাদ চৌধুরী বলেন, “টেন্ডারের নথিপত্র সব ঠিক রয়েছে কি না, তা দেখাই আমার কাজ। প্রধানের কাছ থেকে সব ঠিক হয়ে আসে। তারমধ্যে কারও সই জাল কিনা, তা যাচাই করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”
১০ আসনের গোফানগর পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল এবং বামেরা ৫টি করে আসন দখল করে। এরপর এক বাম সদস্যের সমর্থন নিয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে। দলের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “কাজ নিয়ে প্রধানের সঙ্গে দলের অন্য পঞ্চায়েত সদস্যদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এর সুযোগ নিয়ে বামপন্থীদের উসকানিতে ওই আন্দোলন হয়। প্রধানের সঙ্গে বাকি সদস্যরা বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিয়েছেন।” |