যেন সাদা ওড়নায় মুখ ঢেকেছে জলপাইগুড়ি শহর। সহ গোটা ডুয়ার্স কয়েক ফুট দূরেও রাস্তা, ঘরবাড়ি, গাছপালা দেখা মুশকিল হয়ে যায়। রবিবার দিনভর ঝলমলে রোদ। অথচ রাত থেকে দৃশ্যমানতা এতটাই কমেছে যে, সোমবার সকালে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বেলা ১১ টা পর্যন্ত ‘ফগ লাইট’ জ্বেলে পণ্য বোঝাই ট্রাক চলেছে। এ দিন বাইকে বাড়ি ফেরার সময় গরুমারা জঙ্গলের লাটাগুড়ি এলাকায় বাইসনের সঙ্গে ধাক্কায় ছিটকে পড়ে এক যুবক জখম হন। পর্যটকরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম অমিত দত্ত। তিনি ময়নাগুড়ি দেবীনগর পাড়ার বাসিন্দা সকালে মালবাজার থেকে বাড়িতে ফেরার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। বাইসনটি রাস্তা পার হচ্ছিল। ঘন কুয়াশার জন্য দেখতে না পেয়ে অমিতবাবু বাইক নিয়ে বাইসনের গায়ে ধাক্কা মারেন।
সোমবার দুপুরে এক ঝলক সূর্যের মুখ দেখা গেলেও শীত দাপট কমেনি। কনকনে ঠান্ডা হাওয়ার কামড়ে ছন্দ হারিয়ে জুবুথুবু হয়েছে জনজীবন। বেলা গড়ানোর সঙ্গে শীত বেড়ে চলায় হাট-বাজার জমেনি। বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতাদের দেখা মেলেনি। এমনকী বিকেলের পরে রাস্তাঘাট ফাঁকা হতে শুরু করে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে পা রাখার কথা ভাবতে পারেনি কেউ শীতে কাবু চাষিদের এই দিন সকালে ফসলের খেতে দেখা মেলেনি। কুয়াশার জন্য চাষের মাঠ মনে হয়েছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘে ঢাকা আকাশ রাস্তার মোড়ে অথবা গাঁয়ের বাড়িতে লোকজন খড়কুটো জ্বেলে শরীরের উত্তাপ ধরে রাখার চেষ্টা করেন। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের জলপাইগুড়ি শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার তাপমান যন্ত্রের পারদ ১১ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বায়ুমণ্ডলে জলীয় ভাগ বেড়ে যাওয়ায় কুয়াশার দাপট বেড়েছে। এ দিন আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৭ শতাংশ। ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার বলেন, “এই পরিস্থিতি আরও দুই তিন দিন ধরে চলবে।” |