চাপের মুখে পড়ে বাম শরিকদের কাছে ভুল স্বীকার করলেন সিপিএম নেতৃত্ব। দুঃখপ্রকাশ করেই বুধবার ধর্মতলায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সমাবেশে অস্বস্তি এড়াতে চলেছে তারা। ওই দিন সমাবেশে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শরিক নেতারা।
সিপিএম বা বামফ্রন্টের সমাবেশে শরিকদের গুরুত্ব না দেওয়া নিয়ে অতীতে অনেক বার বিতর্ক বেধেছে। কিন্তু এ বার সমস্যা হয় উল্টো! উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের কর্মসূচিতে কেন তাদের জড়ানো হচ্ছে, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল শরিকেরা। জেলা বামফ্রন্টে আলোচনা না-করেই কেন সমাবেশের প্রচারে তাদের রাজ্য নেতৃত্বের নাম বক্তা হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সভা বয়কট করার কথা ভাবেন শরিক নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব নিজেই শরিকদের জেলা নেতৃত্বের কাছে ভুল স্বীকার করে নেন। তিক্ততা না-বাড়িয়ে শরিকেরাও সমাবেশে উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ধারে ও ভারে অন্যান্য দলের জেলা সম্পাদকদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে গৌতমবাবু। সেখান থেকেই মাঝেমধ্যে জেলা ফ্রন্টে সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে ফ্রন্টের ব্যাখ্যা। ২০১২-র অক্টোবরে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে উত্তর ২৪ পরগনা সিপিএমের সভায় শরিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েও বক্তৃতা করতে দেওয়া হয়েছিল শুধু ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রবীণ নেতা অশোক ঘোষকে। এ বার ‘নবান্ন অভিযানে’র জন্য (যা আদতে শেষ হবে রানি রাসমণিতেই) বাড়ি বাড়ি যাওয়া থেকে শুরু করে জেলা জুড়ে সমাবেশ, সবই হয়েছিল সিপিএমের উদ্যোগে। কিন্তু বুধবারের সভায় বক্তা হিসাবে ফব-র অশোকবাবু, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামীর নামও প্রচার করা হয়েছিল। দলের জেলা নেতৃত্বের আপত্তি শুনে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে বিষয়টি জানান ক্ষিতিবাবুরা। রবিবার জেলার ফ্রন্ট নেতাদের ডেকে ওই পদ্ধতিতে কাজের জন্য মার্জনা চান গৌতমবাবুই।
সিপিআই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “সিপিএম ভুল স্বীকার করেছে। তাই সমাবেশে যাচ্ছি।” তবে নিজেদের আপত্তির বার্তা কৌশলে বুঝিয়ে দিতে ধর্মতলায় থাকবেন না সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুবাবু। ফ্রন্টের একাংশ অবশ্য মনে করছে, সঙ্কটে পড়েই ‘দাদাগিরি’র পুরনো পথে এগোতে গিয়েও পিছোতে হচ্ছে সিপিএমকে! |