রাত ১১টাতেও লোকজনের আসা যাওয়া থামছে না উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পশ্চিমপাড়ার কাঞ্জিলাল বাড়িতে। গৃহকর্তাদের উৎসাহও দেখার মতো। কাউকেই মিষ্টি না খাইয়ে ছাড়ছেন না কাঞ্জিলাল দম্পতি। হবে নাই বা কেন? তাঁদের মেয়ে অরুণিতা তো পুরস্কার নিয়েছে সঙ্গীতসম্রাজ্ঞী আশা ভোঁসলের কাছ থেকে। একটি বেসরকারি চ্যানেলের গানের রিয়েলিটি শোতে প্রথম হয়েছে বনগাঁর দশ বছরের এই খুদে গায়িকা।
রবিবার রাতে প্রতিযোগিতার ফাইনালের টেলিকাস্ট দেখার জন্য কাজকর্ম শেষ করে তড়িঘড়ি টিভির সামনে বসে পড়েছিলেন গোটা বনগাঁর মানুষ। ফাইনালের শ্যুটিং অবশ্য হয়ে গিয়েছিল ২৭ ডিসেম্বরই। রবিবার রাতে মা-বাবার-দাদার সঙ্গে নিজের অনুষ্ঠানের সম্প্রচার দেখছিল অরুণিতাও। নিজের গানের সঙ্গে গলায় মেলাচ্ছিল সে। টিভিতে বিজয়ী হিসাবে তার নাম ঘোষণার আগে বেশ উৎকণ্ঠিতই দেখাচ্ছিল তাকে। অরুণিতা বলে, “যখন নাম ঘোষণা হবে, তখন ঠাকুরকে ডাকছিলাম। আর নাম ঘোষণার পরে সব ক’টা ঠাকুরকে ধন্যবাদ জানিয়ে দিয়েছি। আশাজিকে সামনে থেকে দেখে মনে হল যেন মা সরস্বতী দাঁড়িয়ে আছেন।” |
ফাইনালের শ্যুটিংয়ের দিন সেখানে ছিলেন অরুণিতার মা সর্বাণীদেবীও। রবিবার অনুষ্ঠান সম্প্রচারের বিজ্ঞাপন বিরতির ফাঁকে বললেন, “নন্দিতা চৌধুরীর কাছে গান শেখে মেয়ে। আমাকেও লেগে থাকতে হয়েছে। বারাসতে একটা ব্যান্ডে বিশেষ প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে ওকে। জেতার পরে মনে হল আমার এত দিনের পরিশ্রম সার্থক হল। আরও বড় হোক ও, ভাল মানুষ হোক। আমি আমার মেয়ের জন্য আরও পরিশ্রম করব।” অরুণিতার বাবা রণঘাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অবনীবাবুও বললেন, “মেয়ের এই সাফল্যের পিছনে ওর মা। গানের জন্য সব সময় ও আমাদের সাহায্য পাবে।”
কী বলছে অরুণিতা নিজে? —“আমি শুধু গান গাইতে চাই। আশাজি, লতাজির মতো বড় হতে চাই।”
বোনের সাফল্যে খুশি অরুণিতার দাদাও। বোনের অনুষ্ঠানের ছবি মোবাইলে লাইভ তুলে নিয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অনীশ। আর পাড়া-প্রতিবেশীদের তো কথাই নেই। তাঁদের অভিনন্দনে ভেসে যাচ্ছেন কাঞ্জিলাল পরিবার। |