|
|
|
|
সোফা-টিভি-এসির বিলাসী শৌচাগার, মুম্বইয়ে বিতর্ক |
সংবাদ সংস্থা • মুম্বই
৬ জানুয়ারি |
ঝকঝকে তকতকে ঘর। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রং করা দেওয়াল। পালিশ করা মেঝে। দেওয়ালে ৪২ ইঞ্চি এলসিডি টিভি। নরম গদিওয়ালা সোফা। সার দিয়ে বসে রয়েছেন সবাই। তবে এত সুযোগ সুবিধের দিকে তেমন নজর নেই তাঁদের। আর কী করেই বা হবে। খুবই তাড়া যে! সামনের দরজা কখন খুলবে। কখন কেউ বেরোবেন।
ঘটনাস্থল মুম্বইয়ের কান্দিভলির এক সাধারণ শৌচাগার। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা বিধায়ক প্রবীণ দারেকরের উৎসাহেই তৈরি হয়েছে এই শৌচাগার। সম্ভবত দেশের প্রথম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সাধারণ শৌচাগার। গত শনিবার রাজ ঠাকরে এই শৌচাগারের উদ্বোধন করেছেন।
৩ হাজার স্কোয়ার ফুট এলাকা জুড়ে তৈরি এই শৌচাগারে ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা। রয়েছে ওয়েটিং রুমও। প্রায় চার মাস লেগেছে এটা তৈরি করতে।
কিন্তু একটা সাধারণ শৌচাগার তৈরি করতে এত খরচ কেন? এই নিয়ে যখন হইচই তুঙ্গে, মুখ খুললেন প্রবীণ। জানালেন তেমন কিছু খরচ হয়নি এটা তৈরি করতে। ওই এলসিডি টিভি আর দু’ লাখ টাকার সোফা নাকি দান করেছেন কয়েক জন। সেই সঙ্গে প্রবীণ এ-ও জানিয়েছেন, ওই শৌচাগারের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দু’জন সাফাইকর্মী এবং দু’জন নিরাপত্তারক্ষী থাকবেন। প্রবীণের কথায়, “অনেক মহিলাই নিরাপত্তার অভাব বাধ করায় সাধারণ শৌচাগারে যেতে চান না। এ বার থেকে আর সে রকম কোনও অসুবিধা থাকবে না।”
শুধু তা-ই নয়, অন্য রাজ্য থেকে আসা চাকুরিপ্রার্থীরাও এই শৌচাগার ব্যবহার করে সুবিধে পাবেন বলে মনে করেন প্রবীণ। তিনি বলেন, “এখানে স্নান করার সুবিধে রয়েছে। মাত্র ৫ টাকা ব্যবহার করলেই সুযোগ পাওয়া যাবে। ফলে এখানে যাঁরা অন্য রাজ্য থেকে কোনও কাজে এসেছেন কিন্তু হোটেলে থাকার সামর্থ্য নেই, তাঁরা সহজেই এখানে এসে পরিষ্কার হতে পারবেন।”
তবে এর মধ্যে এত কিছু ভাল দেখতে পারছেন না অনেকেই। এমনই এক সমাজকর্মী নিতাই মেটা বললেন, “শহরে অনেক সাধারণ শৌচাগার দরকার। উদ্যোগটা ভালই। কিন্তু এসি, টিভি বা সোফার পিছনে টাকা খরচ না করে ওই টাকায় আরও কয়েকটা শৌচাগার বানানোই যেত।” আর এক সমাজসেবী জেমসের কথায়, “এটা তো কোনও সাধারণ শৌচাগার নয়, দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনও ডিরেক্টরের অফিস।”
তবে উপর মহলে এ নিয়ে যতই বিতর্ক তৈরি হোক না কেন, অঞ্চলের সাধারণ মানুষ কিংবা পথ চলতি জনতা এখন লাইন লাগিয়েছেন ওই শৌচাগার ব্যবহার করতে। নিখরচায় প্রস্রাবের পাশাপাশি নরম গদিতে বসে টিভি দেখার সুযোগ কেই বা ছাড়তে চায়। |
|
|
|
|
|