মোহনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র
চিকিৎসক নেই, দুষ্কৃতীরা খুলেছে আলো-পাখাও
০ শয্যার হাসপাতাল তৈরির জন্য একটি আলাদা ভবন তৈরি হয়েছিল মগরাহাট ২ ব্লকের মোহনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চত্বরে। কিন্তু ২০১২ সালে উদ্বোধনের পর থেকেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে তালা ঝুলছে সেখানে। দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়ে উঠেছে সেটি। ভিতরের পাখা, আলো, জানলার পাল্লা চুরি করে নিয়ে পালাচ্ছে তারা। অন্য দিকে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ন্যূনতম পরিষেবাও বিপন্ন হয়েছে চিকিৎসকের অভাবে। সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রোগী নিয়ে কোথায় যাবেন, তাই নিয়ে চিন্তিত ও ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। রোগী নিয়ে তাঁদের ছুটতে হচ্ছে মগরাহাট ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথবা ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে।
১৯৯৫ সালে মোহনপুর গ্রামে প্রায় ১০ বিঘা জমির উপর একটি একতলা ভবনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রশান্ত শূর। স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য ছ’টি দোতলা ভবন তৈরি হয়।
বন্ধ পড়ে ভবন। ছবি: দিলীপ নস্কর।
পরবর্তীকালে ২০১২ সালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্যপ্রকল্পের অধীনে ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০ শয্যার হাসপাতালের জন্য একতলা ভবন নির্মাণ হয়। তার উদ্বোধনও করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ কর্মাধ্যক্ষেরা। কিন্তু তার পর থেকেই চিকিৎসক, নার্সের অভাবে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সেটি। সংরক্ষণের অভাবে দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও বাড়ছে সেখানে।
হাসপাতাল তো দূরের কথা, চার পাঁচ বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ন্যূনতম পরিষেবাটুকুও পাচ্ছেন না এলাকার মানুষ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন চিকিৎসকও নেই। বর্তমানে সেটি চালাচ্ছেন এক জন নার্স ও এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। আর এক জন মহিলাকর্মী রয়েছেন। ফার্মাসিস্ট ও সাফাইকর্মীও নেই সেখানে। তাই রোগী নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে কার্যত ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁদের আত্মীয়েরা। তাঁদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে নার্স শ্রাবণী সেনকে। তিনি বলেন, “চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের ক্ষোভের শিকার হতে হচ্ছে আমাদের।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের দাবি, “অবিলম্বে চিকিৎসক নিয়োগ করা হোক। এত রোগী দেখা ও তাঁদের ওষুধ দেওয়া নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ব্লক মেডিক্যাল অফিসার সবই জানেন।”
বাসিন্দারা জানান, অবস্থা সামান্য জটিল দেখলেই এখান থেকে রোগীদের রেফার করে দেওয়া হচ্ছে মগরাহাট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। তাঁদের কথায়, “উদ্বোধনের পরে ভেবেছিলাম আর হয় তো রোগী নিয়ে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতাল বা মগরাহাট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটতে হবে না। পরে দেখলাম, উদ্বোধনই সার। ২০১২ সাল থেকেই তালা বন্ধ হয়ে রয়েছে ১০ শয্যার এই ভবনটি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুষ্কৃতীরা খুলে নিয়ে গিয়েছে পাখা, লাইট ও জানলার পাল্লা-সহ নানা জিনিস।”
তবে মগরাহাট ২ ব্লকের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ গওসউল আলম বলেন, “চিকিৎসক নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলার পরে এক জন চিকিৎসককে পাঠানো হবে।” হাসপাতালটি চালু করার ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, “চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে এটা চালু করা যাচ্ছে না। সে বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে আলোচনা করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.