গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং সিপিএম থেকে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এ দিন তৃণমূলে যোগ দিলেন। কিন্তু খড়িবাড়ির বুড়াগঞ্জের তিলাকাটায় রবিবার সেই অনুষ্ঠানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ। মঞ্চে উঠে বচসা, ধাক্কাধাক্কি, ঢিল ছোড়াছুড়িও বাদ যায়নি বলে অভিযোগ। দলীয় সূত্রের খবর, গোলমালের পর এলাকায় যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি দুই পক্ষকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। কিন্তু মন্ত্রীর বক্তব্য রাখার সময় মাইকের সংযোগ কয়েকবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে বিরক্ত হয়ে মন্ত্রী মাইক ছাড়াই বক্তব্য রাখেন। স্থানীয় নেতারা পরিস্থিতি সামলে মাইকের সংযোগ ঠিক করেন। এর মধ্যে মন্ত্রী কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন। গৌতমবাবু বলেন, “দলের ব্লক নেতৃত্বের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, তা মিটে গিয়েছে। এখন কোনও সমস্যা নেই।” পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী ৮ জানুয়ারি ফের এলাকায় অনুষ্ঠান হবে বলে তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন। খড়িবাড়ির পর পর মাটিগাড়া প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নান্টু বিশ্বাস অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
তৃণমূলের খড়িবাড়ি ব্লক সভাপতি শৈলেন দাস জানান, কোনও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। তবে তাঁর দাবি, “নকশালবাড়ি থেকে দলেরই কিছু লোক এসে আমাদের এলাকার কর্তৃত্ব নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, যা ঠিক নয়। তাতে বাধা দিতে গেলে গোলমাল শুরু হয়।” নকশালবাড়ির ব্লক সভাপতি গৌতম কীর্তনিয়ার পাল্টা দাবি, “অভিযোগ মিথ্যা। আমরাই সমস্ত আয়োজন করেছিলাম। কয়েকজন মদ্যপ বহিরাগত ঝামেলা পাকিয়েছিল। পরে তা মিটে যায়। খড়িবাড়ি ব্লক সভাপতি এমন কেন অভিযোগ করছেন, তা আমি জানি না।” পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রের খবর, দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীও এলাকায় যাওয়ার আগে মঞ্চে উঠে মাইকে ঘোষণা শুরু করেন তৃণমূলে যোগ দিতে আসা এক ব্যক্তি। তিনি দলের ব্লক সভাপতি, বুড়াগঞ্জ অঞ্চল সভাপতি-সহ অনেককেই মঞ্চে না ডেকে অনুষ্ঠান শুরু করে দিতেই গোলমাল শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ। মঞ্চে মাইক কেড়ে নেওয়া থেকেই গোলমাল সূত্র হয়। তা হাতাহাতি, ঢিল ছোড়া অবধি গড়ায়।
ওই অনুষ্ঠানের পর মাটিগাড়ায় গৌতমবাবুর উপস্থিতিতে বিকালে অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা নান্টু বিশ্বাস। তিনি বলেন, “কংগ্রেস আমাকে সম্মান দেয়নি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এলাকার উন্নয়নের জন্য তৃণমূলে যোগ দিলাম।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বজিত্ ঘোষ, জেলার নেতা মদন ভট্টাচার্যও। মাটিগাড়া-২ পঞ্চায়েত প্রধান প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস সহ মোট ৮ জন পঞ্চায়েত সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন। |