আড়াল সরিয়ে মমতার সঙ্গে গল্পসল্প সুচিত্রার
দু’জনে দেখা হল!
অন্তরাল সরিয়ে রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন অসুস্থ সুচিত্রা সেন।
শুক্রবারই মমতা মহানায়িকার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুচিত্রার কেবিনের বাইরে থেকেই চলে আসেন তিনি। প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন সুচিত্রা। তাঁর সেই ইচ্ছাকে সম্মান দিয়েই তাঁর সঙ্গে সে দিন দেখা করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার সারা দিন সুচিত্রার অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। এ দিন সকালেই একটু সুস্থ বোধ করার পরে তাঁকে জানানো হয়, দু’দিন আগে মমতা এসে ঘুরে গিয়েছেন। শুনেই সুচিত্রা চিকিৎসক সুব্রত মৈত্রকে বলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। সুব্রতবাবু এ দিন জানিয়েছেন, ম্যাডাম নিজেই দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তখন মুখ্যমন্ত্রীকে সেটা জানানো হয়।
কথাটা শোনামাত্র মমতা তড়িঘড়ি ছুটে যান হাসপাতালে। সুচিত্রার কেবিনে ২৫ মিনিট সময় কাটান তিনি। পরে ঘনিষ্ঠ মহলে মমতার প্রতিক্রিয়া, “আমার আবেগ আজ পূর্ণতা পেল। আমার হৃদয় দোলা দিয়ে গেল ওঁকে দেখে।” ফেসবুকেও মমতা লিখেছেন, তিনি আপ্লুত।
আর সুচিত্রা? মুনমুন সেন জানাচ্ছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মা-ও খুব খুশি হয়েছেন।”
সুচিত্রা সেনের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।
এ দিন সন্ধেয় মমতাকে সুচিত্রার কেবিনের ভিতরে নিয়ে যান মুনমুন সেন, নাতনি রাইমা এবং চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র। ঘরে ঢুকে রীতিমতো বিহ্বল হয়ে পড়েন মমতা। সুচিত্রার শরীর-স্বাস্থ্যের খবর নেওয়ার পাশাপাশি মমতা জানান, তিনি সর্বতোভাবে তাঁর পাশে থাকতে চান। নিজে থেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি। এর পরে বাকিরা বেরিয়ে যান। শুধু দুজনেরই কথা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সুচিত্রা এবং মমতা শুধু একান্তে কথা বলেছেন তা-ই নয়। সুচিত্রার ইচ্ছায় মমতা সেখানে বসে চা-ও খেয়েছেন। শারীরিক অবস্থা তুলনায় স্থিতিশীল হওয়ায় এ দিন মনমেজাজ বেশ ভাল ছিল সুচিত্রার। দুপুরে গলা ভাত-ডাল-মাছভাজা খেয়েছিলেন। দুর্বল শরীরেই ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে গল্পও করেন। তার পর সন্ধেবেলা ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ মমতা হাসপাতালে আসেন। সাড়ে সাতটা পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে ছিলেন। তার মধ্যে ২৫ মিনিট সুচিত্রার কেবিনে। গোটা বিষয়টা এতই গোপন রাখা হয়েছিল যে, পুলিশও গোড়ায় জানতে পারেনি। হাসপাতালের সামনে পুলিশ মোতায়েন হওয়ার আগেই মমতা ঢুকে যান।
“ওঁর (সুচিত্রা সেনের) সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলাম। আমি নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান। কিংবদন্তি অভিনেত্রী, কত বার যে দেখেছি ওঁর ছবিগুলো। ওঁর সঙ্গে দেখা করতে পেরে আমি আপ্লুত, গর্বিত। খুব আবেগঘন মুহূর্ত।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ফেসবুকে মমতা লিখেছেন, “প্রত্যেকেই জানেন যে উনি কারও সঙ্গে দেখা করতে চান না। এখনও উনি কারও সঙ্গেই দেখা করছেন না। আমি নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান।” রাতে মুনমুন জানান, মমতা খুবই উষ্ণ ভাবে কথাবার্তা বলেছেন। “ওঁর ব্যবহারে আমরা মুগ্ধ। মুখ্যমন্ত্রী মাকে দেখতে ছুটে এসেছেন, এটা আমাদের কাছে খুব বড় ব্যাপার।”
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সঙ্কট পুরোপুরি না কাটলেও এ দিন শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে সুচিত্রা সেনের। তাঁর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা বেড়েছে। নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরে রাখার মেয়াদও আগের চেয়ে কমানো হয়েছে। এ দিন ফিজিওথেরাপি করে বুক থেকে আরও খানিকটা কফ বার করায় তিনি কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা এ দিনও একাধিক বার তাঁকে পরীক্ষা করেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ওষুধ-ইঞ্জেকশনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির বিষয়টাতেই তাঁরা এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম সদস্য সুব্রত মৈত্র বলেন, “ওঁকে হাল্কা খাবার দেওয়া হচ্ছে। উনি উঠে বসতেও পারছেন। রক্তচাপ এবং হৃৎস্পন্দন এ দিন স্বাভাবিকই রয়েছে। তবে দুর্বলতা এখনও কাটেনি।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.