|
|
|
|
প্রতিরক্ষা বাহিনীর জলযানে ঘুরে স্বপ্নে বুঁদ অনন্যারা
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হোভারক্রাফটে চড়ে ঘোরার কথা স্বপ্নেও কোনও দিন ভাবেনি ওরা। সচক্ষে উপকূলরক্ষী বাহিনীর নানা কলাকৌশল ও সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারকে সামনে থেকে উড়তে দেখে উচ্ছসিত কলকাতার এন্টালি এলাকা থেকে আসা ২৬ জন পথ শিশু-কিশোর ও অনাথ ছাত্রী। তাঁদের মধ্যে চার জন থ্যালাসেমিয়া ও ক্যানসার আক্রান্ত ছাত্রছাত্রীও রয়েছে। শনিবার ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হলদিয়া বিভাগের পক্ষ থেকে হলদি নদীতে ওই ছাত্রছাত্রীদের বাহিনীর হোভারক্রাফটে ঘোরা ও কলাকৌশল দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী দিবস। সেই উপলক্ষে উপকূলরক্ষী বাহিনীর হলদিয়া বিভাগ বিশেষ ছাত্রীদের সামনে তাঁদের কলাকৌশল ও সমরাস্ত্র চাক্ষুষ দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হলদিয়া বিভাগের এগ্জিকিউটিভ অফিসার কমাড্যান্ট অমিতাভ দাস জানান, ৩৭তম ভারতীয় উপকূলরক্ষী দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এ বারও জানুয়ারি মাস জুড়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আন্তঃস্কুল ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির, বাইক র্যালি, উপকূল এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে মৎস্যজীবীদের সচেতন করার মতো কর্মসূচি রয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে।” |
|
হোভার ক্র্যাফট্-এর সামনে সকলে।—নিজস্ব চিত্র। |
শনিবার হলদি নদীতে ওই ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহৃত হোভারক্রাফট ‘এইচ ১৮৬’তে করে ঘোরানো হয়। ওই সকল ছাত্রছাত্রীদের বাহিনীর জাহাজ ‘রাজকিরণ’-এর বিভিন্ন কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে জানান হয়। উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাজ করার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কেও বোঝানো হয় তাঁদের। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে কলকাতা থেকে ওই ছাত্রছাত্রীদের হলদিয়ায় নিয়ে আসা হয়। ওই সংস্থার কলকাতা শাখার চেয়ারম্যান পঙ্কজ হরলালকা বলেন, “দুঃস্থ এই শিশু, কিশোররা শিক্ষার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। এদের জন্য উপকূলরক্ষী বাহিনী যে সুযোগ করে দিলেন, তার জন্য আমরা সবাই কৃতজ্ঞ।” ওই ছাত্রীদের জন্য উপকূলরক্ষী বাহিনীর প্রেক্ষাগৃহে ম্যাজিক শো ও কথা বলা পুতুল নিয়ে এক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। উপকূলরক্ষী বাহিনীর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান এন ভি নরসিংহ বলেন, “ছাত্রীরাও যাতে ভবিষ্যতে এই কাজে যোগ দেয়, সেজন্যই এই উদ্যোগ।”
ক্যানসার আক্রান্ত বসিরুদ্দিন শেখ, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু মণ্ডলরা বাহিনীর বিশেষ প্রদর্শনী দেখে অভিভূত। বসিরুদ্দিন শেখ বলে, “উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাজ দেখে ভাল লাগল। শারীরিক অক্ষমতার কারণে আমরা হয়তো এই কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাব না। কিন্তু, মানসিক ভাবে ওঁদের পাশে থাকব।” সপ্তম শ্রেণির স্নেহা সাউ বলেন, “উপকূলরক্ষী বাহিনী কী ভাবে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে, তা নিজের চোখে দেখলাম।” নবম শ্রেণির ছাত্রী সিম্মি খাতুন বলেন, “সমাজে আমরা নানাভাবে অবহেলিত। এঁদের কাছ থেকে আমরা যে সম্মান পেলাম, তা কোনওদিন ভুলবো না। ভবিষ্যতে দেশের প্রতিরক্ষার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করব।” |
|
|
|
|
|