সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকা এক শ্রমিকের দেহ উদ্ধারের পরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ হল এক বেসরকারি তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রের সামনে। নিকট আত্মীয়ের চাকরি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে মৃতের পরিজন ও সহকর্মীদের একাংশ অবস্থান -বিক্ষোভ করেন। রবিবার দুপুরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পরে বারাবনির সরিষাতলে এই বিক্ষোভ থামে। বিক্ষোভের জেরে উত্পাদনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে বলে ওই তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র সূত্রে খবর।
পুলিশ ও তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র সূত্রে খবর, সংস্থার ঠিকা কর্মী কেতাবুল শেখের (৩৫ ) বাড়ি বারাবনির রাখাকুরা গ্রামে। পুলিশের কাছে তাঁর স্ত্রী রেজিনা বেগম জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতের পালিতে ডিউটি ছিল তাঁর স্বামীর। সেই মতো কাজে যান। কিন্তু পরের দিন সকালে তিনি ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। কোনও হদিস মেলেনি। শনিবার সকালে বাড়ির লোকেরা খবর পান, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া এলাকায় কেতাবুলের দেহ মিলেছে। সেখানকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা জানতে পারেন, ফতেপুরের কাছে রাস্তার পাশে দেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় কয়েক জন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দেহটি স্থানীয় হাসপাতালে ময়না -তদন্তের জন্য পাঠায়। মৃতের পকেট থেকে পাওয়া পরিচয়পত্র দেখে বাড়িতে খবর পাঠায় পুলিশ। |
বারাবনিতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
শনিবারই দেহ সেখান থেকে আনার পরে বিদ্যুত্কেন্দ্রের সামনে গিয়ে হাজির হন কেতবুলের পরিজনেরা। দেহ রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়। যোগ দেন রাখাকুরা গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা। বিদ্যুত্কেন্দ্রের সাধারণ শ্রমিক -কর্মীরাও সামিল হন। ফলে, উত্পাদন ব্যাহত হয়। বিক্ষোভকারীরা দাবি তোলেন, মৃত শ্রমিকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের এক জনের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে আমল না দেওয়ায় বিক্ষোভ চলতে থাকে।
তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতাবুল সে দিন কাজ করার পরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যে ঠিকাদার সংস্থার কর্মী ছিলেন তার আধিকারিক সৌরভ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে অন্যত্র। সে কারণে আমাদের কিছু করার নেই। তবু মানবিকতার খাতিরে আমরা আলোচনা চেয়েছি। তবে ওঁরা যা দাবি করছেন, তা মানা সম্ভব নয়।” তাঁর দাবি, যে ভাবে বিক্ষোভ হয়েছে, তা অন্যায়। প্রশাসনকেও তাঁরা বিষয়টি জানিয়েছেন। রবিবার দুপুর পর্যন্ত এই অবস্থা চলার পরে আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস এক জন এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। অমিতাভবাবু বলেন, “আমি বিক্ষেভকারীদের দেহ সত্কারে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছি। এ ভাবে মৃতদেহ ফেলে রাখা ঠিক নয়। পরে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।” কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম ) সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, বারাবনির সার্কেল ইনস্পেক্টর বিচিত্রবিকাশ ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী মঙ্গলবার উভয়পক্ষকে নিয়ে একটি সভায় সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। |