রাতের বেলায় ট্রাক্টর করে বালি ফেলে পুকুর ভরাটের অভিযোগ পেয়েও পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত জেলাশাসকের নির্দেশে বিডিও এবং পুলিশ অফিসারেরা পুকুর ভরাট বন্ধ করেছেন। শনিবার বালুরঘাট শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দবাগান পাড়া এলাকার ঘটনা।
ওই পুকুর ভরাটের পেছনে দলের এক নেতা তথা প্রোমোটার জড়িত বলে অভিযোগ ওঠায় তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরকর্তৃপক্ষ উদাসীন ছিলেন বলে বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেছেন। যদিও তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায়ের দাবি, “পুকুর ভরাটের পেছনে দলের কোনও নেতা জড়িত নন। প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।” ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর ব্রতময় সরকারের বক্তব্য, “স্থানীয় ভাবে অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি দেখতে গেলে প্রোমোটার তরফে পুকুরের ভেঙে যাওয়া পাড় বাঁধাতে বালি ফেলা হচ্ছিল বলে দাবি করা হয়েছিল। সেখানে একটি গুদাম তৈরি করা হবে বলেও জানানো হয়। তাই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেইনি। তবে পুকুর ভরাটের অভিযোগ আমাদের কাছে ছিল না।”
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা ভূমি রাজস্ব দফতর সূত্রের খবর, শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দবাগানপাড়া এলাকায় ওই পুকুরটির আয়তন প্রায় ৩৭ শতক। ১৯৬২ সালের রেকর্ড আনুযায়ী ওই পুকুরের মালিকানা দু’জনের নামে রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে পুকুরটি এলাকার একটি ক্লাব কিনে নেয় বলে বাসিন্দারা দাবি করেছেন। সম্প্রতি স্থানীয় প্রোমোটার অমর দাস ক্লাবের কাছ থেকে পুকুরটি কিনে ভরাট করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রোমোটার অমর দাস তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার আত্মীয় বলেও জল্পনা রয়েছে। এ দিন অবশ্য অমরবাবু বলেন, “আমি পুকুরের মালিক না। ক্লাব থেকে ওই পুকুর ভরাট করে বিক্রির কথাবার্তা চলছিল। পুকুর ভরাটের সঙ্গে আমি যুক্ত নই।” স্থানীয় ওই ক্লাব অবশ্য তা অস্বীকার করেছে। এ দিন ক্লাবের তরফে বিডিওকে জানানো হয়েছে, অমরবাবুর কাছেই পুকুরটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।” বালুরঘাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীল বলেন, “যাঁরাই এর পিছনে থাকুন না কেন, প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।” বালুরঘাটের বিডিও শুভ্রজিত গুপ্ত বলেন, “পুকুরের মালিক হিসাবে অমর দাসের নাম মিলেছে। জেলাশাসকের নির্দেশে পুকুর ভরাট বন্ধ করা হয়েছে।”
|