চুরি সল্টলেকে নতুন নয়। তবে দুষ্কৃতীরা এতটাই বেপরোয়া যে, এ বার তারা প্রাক্তন এক আইএএস-কর্তার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে গয়নাগাঁটি ও লক্ষাধিক টাকার জিনিস নিয়ে পালিয়ে গেল। ওই বহুতলেই আবার থাকেন রাজ্যের এক গোয়েন্দা-কর্তাও।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে। সল্টলেকের কে বি ব্লকে একটি বহুতল আবাসনের চারতলার বাসিন্দা প্রাক্তন ওই আইএএস কর্তা কে পি সিংহ। ওই বহুতল বাড়িতেই দোতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন রাজ্যের এডিজি (আইবি) বাণীব্রত বসু।
কে পি সিংহ জানিয়েছেন, ওই সময়ে তিনি কাজে বেরিয়েছিলেন। স্ত্রী নমিতাদেবীও দুপুর বারোটা নাগাদ বাজারে যান। ঘণ্টা দেড়েক পরে নমিতাদেবী ফিরে এসে দেখেন, বাড়ির দরজার হুড়কোটি ভাঙা। সেটি ভেজানো রয়েছে। ঘরে ঢুকে দেখা যায়, খাওয়ার ঘরের ডান দিকের একটি ঘরে আলমারি খোলা। সেখানে রাখা গয়না, নগদ টাকা ও লক্ষাধিক টাকার সামগ্রীর হদিস মেলেনি। তখনই নমিতাদেবী তাঁকে ফোনে সব জানান। খবর দেওয়া হয় বিধাননগর দক্ষিণ থানাতেও। এর পরে তদন্তে নামে পুলিশ। রাতভর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও চালানো হয়। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিধাননগরের গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষ।
এর আগে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে সল্টলেকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্লকগুলিকে নিশানা করেছে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু এ বারের ঘটনা একটি আবাসনে, যেখানে একাধিক পরিবার বাস করে। নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছে সেখানে। তদন্তকারীদের ধারণা, যে বা যারা এই চুরির ঘটনায় যুক্ত, তারা ওই ফ্ল্যাট ও বসবাসকারীদের সম্পর্কে বেশ ভাল ভাবেই ওয়াকিবহাল ছিল।
সল্টলেকবাসীদের অবশ্য অভিযোগ, ঘটা করে কমিশনারেট হলেও চুরি আটকাতে সব ক্ষেত্রে সফল নয় পুলিশ। কাগজে-কলমে নজরদারি বাড়লেও বাস্তবে তা চোখে পড়ে না। বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকও করা হচ্ছে না। বাসিন্দাদের সংগঠন ‘বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ নিজেদের বাড়ির নিরাপত্তা রাখতে পারছে না। বিধাননগর পুলিশকর্তারা চেষ্টা করলেও বাসিন্দাদের যুক্ত না করে একা পুলিশের পক্ষে এই অপরাধ ঠেকানো মুশকিল। আগের মতো নিয়মিত বৈঠকও হচ্ছে না।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে এক পুলিশকর্তা বলেন, “নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। আগের চেয়ে নজরদারি বাড়ার ফলেই অপরাধ কমেছে।” বিধাননগরের এডিসিপি অজয়প্রসাদ বলেন, “ওই বাড়ি থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত অভিযুক্তদের ধরা যাবে। এর আগে কয়েকটি চুরির সঙ্গে এই ঘটনার মিল রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |