খনি-দূষণে কালো হয়ে যায় ভাতও, নালিশ মোহনপুরে
নি কর্তৃপক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন। বিধায়ক থেকে সাংসদ। বহু আবেদন নিবেদন করেও দূষণ থেকে রেহাই মেলেনি। এমনই অভিযোগ বারাবনির মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দাদের।
বারাবনিতে ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার মোহনপুর খোলামুখ খনির ঠিক পাশেই রয়েছে মোহনপুর গ্রাম। বহু বছরের পুরোন এই গ্রামে বসবাস করে প্রায় ৫০০টি পরিবার। সম্প্রতি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খোলামুখ খনিতে কয়লা কাটার আগে বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। ফলে, কয়লার কালো ধোঁয়া ও ধুলোয় ভরে যাচ্ছে গোটা অঞ্চল। বাসিন্দাদের ঘরও সেই সব ধোঁয়া-ধুলোয় ভরে যাচ্ছে। বিস্ফোরণের জেরে ঘর বাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের। আতঙ্কে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, কয়লা কাটার পরে তা ডাম্পারে চাপিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সে জন্যও এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। এই ধরনের দূষণে জেরবার মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা তরুন তিওয়ারির অভিযোগ, “ভাতের রঙ কালো হয়ে যাচ্ছে। পানীয় জলের উপরে কালো সর পড়ে যাচ্ছে।” আর এক বাসিন্দা অভিজিত্‌ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “গ্রামের বয়স্ক মানুষজন ও শিশুরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।”
কয়লা পরিবহণের জেরে রাস্তার এই হাল হয়েছে বলে অভিযোগ।
দূষণের হাত থেকে নিস্তার পেতে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন বলে জানান গ্রামবাসীরা। খনির সালানপুর এরিয়া দফতরে একাধিক বার অবস্থান-বিক্ষোভও করেছেন তাঁরা। বারাবনি ব্লকের যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় অভিযোগ করেন, গ্রামবাসীদের এই সমস্যার কথা কেউ ভাবছেন না। তাঁর কথায়, “আমরা বিধায়ক, সাংসদ, খনি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন, সকলকে বেশ কয়েক বার বলেছি। কারও কোনও হেলদোল না দেখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।” এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় ও আসানসোলের সিপিএম সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরী, দু’জনেই জানান, ইসিএল কর্তৃপক্ষকে এই অঞ্চলটিকে তাঁদের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে।
দূষণ থেকে রেহাই পায়নি পুকুরও।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, গ্রামবাসীরা এই সমস্যার কথা তাঁর কাছেও লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তিনি খনি কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দাদের খনির দূষণে ভোগার অভিযোগ প্রসঙ্গে ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জিএম এ কে সিংহের দাবি, “আমরা দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই করছি। খুব কম মাত্রায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা তোলার কাজ চলছে। তাতে এলাকার ঘরবাড়ির কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ জানান, মোহনপুর গ্রামকে ইসিএলের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনাও হয়েছে। ‘কোলমাইন প্ল্যান ডিজাইনিং ইন্সটিটিউট’ সংস্থাকে দিয়ে সেখানকার একটি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সেই কাজ শুরু করা হবে বলেও খনি সূত্রে জানানো হয়েছে।

ছবি: শৈলেন সরকার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.