|
|
|
|
অসম, উত্তর-পূর্বে দানা বাঁধছে আপের আন্দোলন
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
৩ জানুয়ারি |
দিল্লিতে ভাল ফলের পরে অসমে আম আদমি পার্টির (আপ) সদস্য সংগ্রহে জোয়ার এসেছে। আবেদনপত্র ছাড়ার দু’দিনের মধ্যে ৪০০ আবেদন এসেছে। তবে লোকসভা ভোটে অসমে প্রার্থী দেওয়া হবে কী না সেই সিদ্ধান্ত ‘আম আদমি’র উপরেই ছেড়ে দিচ্ছে প্রদেশ ‘আপ’।
দলের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা এতদিন সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখতেন, মূলত সেই সব শিক্ষক, ছাত্র, বেসরকারি কর্মীরা ‘আপ’-এ যোগ দিচ্ছেন। তবে দলের যুগ্ম কো-অর্ডিনেটর ভবেন সন্দিকৈ জানান, যাঁরা দলে যোগ দিচ্ছেন, তাঁদের সকলকে বলা হচ্ছে পরিবর্তন আনার স্বার্থে, সব ধরণের আত্মত্যাগে রাজি থাকলে তবেই যোগ দিন। দলের তরফে জানানো হয়, দিল্লির ফলের পরে রাজ্যের কিছু কংগ্রেস, বিজেপি ও অগপ নেতা ‘আপ’-এ যোগ দিতে চেয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু দলের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, ক্ষমতা ও অর্থের লোভে এখানে এসে লাভ হবে না। ‘আপ’ গোটা প্রক্রিয়াটিকেই দূষণমুক্ত করতে চায়। আমরা রাজনীতির বাইরের, দৃঢ় মতাদর্শের মানুষদের স্বাগত জানাচ্ছি।
মেঘালয়ের রাজ্যপাল পদ ছাড়ার পরে বিএসএফ ও এনএসজির প্রাক্তন ডিজি রঞ্জিৎ শেখর মুশাহারি স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত নতুন রাজনৈতিক দল গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, রাজনীতিতে যোগ দিয়ে তিনি ২০১৪-র লোকসভা ভোটে কোকরাঝাড়, গুয়াহাটি বা মঙ্গলদৈ থেকে লড়তে চান। কিন্তু দিল্লির সাফল্যের পরে অসমেও আপের জনপ্রিয়তা দেখে সম্ভবত সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন তিনি। সব ঠিক চললে আপে নাম লেখাতে চলেছেন মুশাহারি। গত কালই মুশাহারি অসমে ‘আপ’-এর সদর দফতরে আসেন। কথা বলেন দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে। তবে তিনি বলেন, “এখানে এসে দলের পরিকাঠামো ও সাংগঠনিক কাঠামো দেখলাম। বুঝতে চেষ্টা করলাম সদস্যদের উৎসাহ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নিইনি।”
অবশ্য আম আদমি পার্টির উত্থান বা মুশাহারির ‘আপ’-এ যোগ দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস ততটা চিন্তিত নয়। কংগ্রেসের মতে, রাজ্যে বিজেপি বা মোদি যেমন কোনও চ্যালেঞ্জ নয়, তেমনই আম আদমির হুজুগও সাময়িক। এখন অবধি মুশাহারিই ‘আপ’-এ আগ্রহ দেখানো একমাত্র চেনা নাম। জনগণ জানে, অসমে তথা উত্তর-পূর্বে কংগ্রেসই স্থায়ী সরকার চালাবার জন্য একমাত্র সক্ষম দল। অগপ অবশ্য মেনে নিচ্ছে, রাজ্যে কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে মানুষের স্বতস্ফূর্ত উদ্যম প্রয়োজন, যেমনটা দিল্লিতে হয়েছে। তাই আম আদমির ভবিষ্যৎ নিয়ে অগপ এখনই মন্তব্য করতে নারাজ। দলের তরফে জানানো হয়েছে, লোকসভা ভোটে ‘আপ’-এর সঙ্গে জোট বাঁধার ব্যাপারে এখনও কিছু ভাবা হচ্ছে না। ‘স্বরাজ’ অভিযানের মধ্য দিয়ে রাজ্য ‘আপ’ দিসপুর থেকে গ্রাম সভায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে সওয়াল শুরু করেছে। ভবেনবাবু নিজে আগে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা ছিলেন। যে সংগঠন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লাগাতার বাঁধ বিরোধী আন্দোলন করে চলেছে। ভবেনবাবুর আশা, আগামী নির্বাচনে সমিতি ‘আপ’কেই সমর্থন করবে। তাঁর মতে, “রাজ্যে কংগ্রেস, এআইইউডিএফ, বিজেপি ও অগপর ক্ষমতাকেন্দ্রীক রাজনীতি দেখে সাধারণ মানুষ ক্লান্ত। তাই তাঁরা পরিবর্তনের দিকে ঝুঁকবেনই।” তবে ‘আপ’ এও জানায়, লোকসভা ভোটে প্রদেশ ‘আপ’ আদৌ লড়বে কী না তা ঠিক করবেন আম জনতাই। দলের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নাগরিক সভা করে এই ব্যাপারে মানুষের রায় চাওয়া হচ্ছে। আপাতত রাজ্যের আটটি জেলায় আপ-এর শাখা খোলা হয়েছে। শীঘ্রই রাজ্যের সব জেলায় পৌঁছবে আপ। প্রদেশ আপ-এর পক্ষে জানানো হয়, শীঘ্রই অরবিন্দ কেজরিওয়াল, যোগেন্দ্র যাদব, অজিত ঝাকে নিয়ে রাজ্যে একটি সম্মেলনের করা হবে।
উত্তর-পূর্বে আপ-এর ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হেবুং পায়েং নিজে অরুণাচল প্রদেশের তথ্য কমিশনার ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা উত্তর-পূর্বে খুব ভাল সাড়া পাচ্ছি।” |
|
|
|
|
|