বলেছিলেন রাষ্ট্রের বিরোধী, সময় দিতে চান এখন

৩ জানুয়ারি
ঠেলার নাম আম আদমি।
অণ্ণা হজারে আর অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের এক সময় রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি বলে চিহ্নিত করেছিল মনমোহন সিংহ সরকার। আর এখন সেই আম আদমির সরকারকেই কার্যত স্বাগত জানিয়ে তাদের কাজ করার জন্য সময় দেওয়ার অনুরোধ জানালেন খোদ মনমোহন। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, দিল্লির নির্বাচনের পর আপ-কে এখন আর উপেক্ষা করার সাহস নেই কোনও দলেরই। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য থেকে আজ সেটাই প্রমাণ হল।
অথচ মাত্র দেড় বছর পিছিয়ে গেলেই দেখা যাবে, কয়লা খনি বণ্টনে প্রধানমন্ত্রী-সহ মোট ১৫ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অণ্ণা-কেজরিওয়াল শিবির। তা মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের বক্তব্য ছিল, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির মদতেই দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছেন অণ্ণা ও কেজরিওয়ালেরা। প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী মন্তব্য করেছিলেন, এই স্বঘোষিত নেতাদের কোনও জনভিত্তি নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ভয় পায় এরা।
আজ পরিস্থিতি ভিন্ন। কংগ্রেসকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে, বিজেপির বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে দিল্লিতে সরকার গড়েছে আপ। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও আস্থা ভোটে জিতেছে। ফলে কার্যত বাধ্য হয়েই কেজরিওয়ালদের সাফল্যকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন মনমোহন। সে দিন যাদের রাষ্ট্রবিরোধী বলা হয়েছিল, তাদের ক্ষমতায়নকেই আজ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সুফল বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, “আমাদের সকলেরই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করা উচিত।”
আপ নেতৃত্বের প্রতি মনমোহনের এই নরম মনোভাবই বুঝিয়ে দিচ্ছে এই মুহূর্তে কতটা অসহায় কংগ্রেস। বিশেষ করে রাজধানীতে বিধানসভা ভোটের পর অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে দল। প্রাসঙ্গিকতা বাঁচিয়ে রাখতে আপ-এর সঙ্গে হাত মেলাতে বাধ্য হয়েছে তারা। কারণ কংগ্রেস জানে, দিল্লিতে এই মুহূর্তে সরকার পড়ে গেলে ফের নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে। তা হলে রাজধানী থেকে সাফ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তাই দলের একাংশের অনিচ্ছা সত্ত্বেও আস্থা ভোটে কেজরিওয়ালকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেন শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব। আজ তারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে কংগ্রেসের সমর্থনে বিধানসভায় জেতেন আপের স্পিকার প্রার্থী এম এল ধীর। পরিস্থিতি যা তাতে কংগ্রেস সমর্থন না তুলে নিলে ছ’মাস দিল্লিতে ক্ষমতায় থাকছে কেজরিওয়ালের দল। প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, “নিজেদের প্রমাণ করার জন্য কিছুটা সময় দেওয়া উচিত আপকে।”
আপ শিবির বা কেজরিওয়াল কী বলছেন কংগ্রেসের এই ভোলবদল নিয়ে? এ যাবৎ কংগ্রেস তথা মনমোহন সরকারের দুর্নীতি নিয়েই সবথেকে বেশি সরব ছিলেন কেজরিওয়ালেরা। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পরে তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি কেজরিওয়াল। দুর্নীতি প্রসঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শুধু বলেন, ‘‘দুর্নীতি দূর করা প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত সকলেরই।” একই কথা প্রকারান্তরে কেজরিওয়ালকেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, “দুর্নীতির সঙ্গে লড়াই কিন্তু সোজা কাজ নয়। সকলকে এক সঙ্গে লড়াই করতে হবে।” তবে আপ মন্ত্রিসভার মণীশ সিসৌদিয়া টুইট করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী কোনও ভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। কেননা কয়লা বণ্টনের ফাইল তাঁর দফতর থেকেই উধাও হয়েছিল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.