|
|
|
|
রাস্তার কাজ ঘিরে সংঘর্ষ মহম্মদবাজারে
নিজস্ব সংবাদদাতা • মহম্মদবাজার |
১০০ দিন প্রকল্পে একটি রাস্তা সংস্কারের কাজকে ঘিরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মহম্মদবাজারের চড়িচা পঞ্চায়েত এলাকা। শুক্রবার সকালের ওই ঘটনায় দু’ পক্ষেই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়িও পুড়েছে। ঘটনায় তৃণমূলের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পাঁচ সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত শেখ নৌসাদ-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।”
শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত চড়িচা পঞ্চায়েতে সিপিএম এ বার তৃণমূলের কাছে হেরেছে। বর্তমানে দলগত অবস্থান তৃণমূল ৫ ও সিপিএম ৩। ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকায় শিউলিপাহাড়ি-গোপালপুর হয়ে জেলা পরিষদের প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা চলে গিয়েছে কড়কুড়ি-বিষ্টুপুর। সম্প্রতি একশো দিন প্রকল্পে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ওই রাস্তা সংস্কার-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে চড়িচার শিউলিপাহাড়ি গ্রামে বেশ কিছু দিন ধরেই দু’পক্ষের গণ্ডগোল চলছিল। এ দিন তা চরম আকার নেয়। সিপিএমের অভিযোগ, ওই রাস্তার কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। সিপিএম সমর্থকদের সেখানে কাজও দেওয়া হচ্ছে না। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক প্রভাস মাল বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড পক্ষপাতিত্ব করছে। কোনও কাজেই সিপিএম সদস্যদের ডাকা হয় না। তৃণমূল একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিবাদ করলেই হুমকির মুখে পড়তে হয়।” তাঁর দাবি, বাসিন্দাদের একাংশ ক’ দিন আগে ওই রাস্তা তৈরির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত জানতে চান। তার পর থেকেই গণ্ডগোল শুরু হয়। ওই সিপিএম নেতার অভিযোগ, “এ দিন সকালে তৃণমূল নেতা জয়ন্ত ঘোষের নেতৃত্বে গ্রামে বাইক বাহিনী ঢুকে সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করা হয়। ওই হামলায় সানাই শেখ, খুরশিদ মিঞা-সহ বেশ কয়েক জন সিপিএম সমর্থক আহত হন। হামলা থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীরা পাল্টা প্রতিরোধ করলে তৃণমূলের গুণ্ডা বাহিনী পালিয়ে যায়।”
তৃণমূলের যদিও পাল্টা অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরে সিপিএমের লোক জন ওই গ্রামের তৃণমূল সমর্থকদের শাসাচ্ছে। এ দিন সকালে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ওই গ্রামে ঢোকেন। তখনই তাঁদের উপরে সিপিএমের লোক জন বোমা, রড, লাঠি নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় তৃণমূলের চড়িচা অঞ্চল সভাপতি জয়ন্ত ঘোষ ও এক কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি। তাঁদের সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মহম্মদবাজার ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তাপস সিংহ বলেন, “ওই গ্রামে সিপিএমের লোক জন তৃণমূলে সমর্থকদের প্রায় দিন হুমকি দিত। অনেককে গ্রাম ছাড়ার হুমকিও পর্যন্ত দেওয়া হয়। সেই খবর পেয়ে জয়ন্তবাবু সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দলীয় সমর্থকদের নিয়ে ওই গ্রামে যান।” তাঁর অভিযোগ, গ্রামে ঢুকতেই সিপিএমের লোক জন তাঁদের উপরে হামলা করে। তাপসবাবুর দাবি, “জয়ন্তবাবুর পা ও মাথা ভেঙেছে। আরও অনেকে দলীয় কর্মীই এ দিনের আক্রমণে আহত হয়েছেন। পরে স্থানীয় দুই সিপিএম নেতার নেতৃত্বে ওই গ্রামে আমাদের এক সমর্থকের বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়।”
এ দিকে, ঘটনায় প্রভাসবাবু পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, জয়ন্ত ঘোষ-সহ তৃণমূলের কয়েক জনের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ ধরেনি। করে মিথ্যা অভিযোগে সিপিএম সমর্থকদের গ্রেফতার করেছে। পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, সিপিএমের অভিযোগ জমা পড়েনি। |
|
|
|
|
|