|
|
|
|
ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নলহাটি |
মেলা থেকে ফেরার পথে এক নাবালিকাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল পড়শি এক যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নলহাটি থানা এলাকার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক কেয়ামুদ্দিন শেখকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। শুক্রবার মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বিগত কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “এ রকম নয় যে আমরা বসে আছি। তবে আমাদের সাধ্যমতো আমরা দোষীদের ধরার চেষ্টা করছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নির্যাতিতা তার পড়শি তিন বন্ধুর সঙ্গে গ্রাম সংলগ্ন একটি মেলা দেখতে গিয়েছিল। এ দিন হাসপাতালের বেডে ওই ছাত্রী জানায়, মেলায় তাদের দেখতে পেয়ে গ্রামের পরিচিত যুবক কেয়ামুদ্দিন সবাইকে মিষ্টি কিনে খাওয়ায়। মেয়েটি বলে, “মিষ্টি খাওয়ার পরে আমরা বন্ধুরা মেলায় জিনিস কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ৭টার দিকে আমি প্রস্রাব করতে মেলার আলোর দিক ছেড়ে একটু অন্ধকার জায়গায় গিয়েছিলাম। হঠাই কেয়ামুদ্দিন পিছন দিক থেকে এসে আমাকে জাপটে ধরে। আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সে আমার মুখ চেপে ধরে মেলার মাঠ থেকে অনেক দূরে নিয়ে চলে যায়।” সেখানে নিয়ে গিয়েই যুবকটি তার উপরে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ওই অবস্থায় নাবালিকা কোনও রকমে বাড়ি ফিরে আসে। তার মা বলেন, “মেয়ে প্রথমে ভয়ে কিছু বলতে পারেনি। পরে তার প্যান্টে রক্তের দাগ দেখে আমার সন্দেহ হয়। মেয়েকে চাপ দিতেই সে সব বলে।” এরপরে মেয়েটির পরিবার অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে নলহাটি থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতেই তাকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ দিকে নির্যাতিতার পরিবার হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। লিখিত অভিযোগ না করলেও তাঁরা জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার পরে চিকিৎসকেরা রাতভর মেয়েটির কোনও চিকিৎসাই করেননি। অভিযোগ, শয্যা না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে সারা রাতে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের একটি টেবিলের উপর বসে থাকতে হয়। মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করতে দেরি হওয়ায় চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তুলেছেন কিশোরীর পরিবার। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টা নাগাদ ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে ঘটনার প্রায় ১২ ঘণ্টা পরে তার শারীরিক পরীক্ষা হয়। হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার অবশ্য বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় মেডিক্যাল টেস্ট করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা আইনি জটিলতার মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালের এক জন চিকিৎসককে (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ) বলা হয়েছিল। প্রথম দিকে তিনি রোগীকে ওয়ার্ডে দেখতে পাননি। পরে দেখতে পাওয়ার পরে মেডিক্যাল টেস্ট করার ব্যবস্থা করা হয়।” পরীক্ষার রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে কিনা সুপার সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
অভিযুক্ত যুবকের কাকা তথা কয়থা ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আখতারুজ্জামান বলেন, “রাতে খবর পাওয়ার পরে দাদাকে বলি ভাইপোকে যে কোনও উপায়ে বাড়িতে আটকে রাখ। কিন্তু ভাইপো রাতে বাড়ি ফেরেনি। ও যদি দোষ করে থাকে, তা হলে শাস্তি পাবে।” |
|
|
|
|
|