সন্ধ্যা হলেই কাঁকসা থেকে মানকর যাওয়ার রাস্তায় বাড়ছে ছিনতাই। রাস্তার মাঝে মুখে কাপড় বেঁধে মোটরবাইক কিংবা সাইকেল আটকাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তার পরে মারধর করে লুঠের পরে চম্পট দিচ্ছে তারা। শুধু মোটরবাইক বা সাইকেল নয়, অ্যাম্বুল্যান্স আটকে চালককে মারধর করে সঙ্গে থাকা টাকা, মোবাইল কেড়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের নাগাল পায়নি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা থেকে শুরু হয়ে এই রাস্তাটি, সোঁয়াই, পন্ডালি, কোটা, মাড়ো গ্রাম হয়ে মানকরে শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অন্তর্ভুক্ত এই রাস্তাটি দিয়ে সহজেই কাঁকসা থেকে মানকরে যাওয়া যায়। পানাগড়ের জিটি রোডে যানজট হওয়ার কারণে অনেকেই বুদবুদ বা কোটা মোড় থেকে এই রাস্তা ধরে কাঁকসার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। পানাগড়ের নির্মীয়মাণ সার কারখানার অনেক কর্মীও ব্যবহার করেন এই রাস্তা। ফলে সারাদিন তো বটেই অনেক রাত পর্যন্তও এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু পরপর বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনার পরে এই রাস্তা দিয়ে সন্ধ্যার পর গাড়ি চলাচলের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই রাস্তার মধ্যে কোটা গ্রাম থেকে মাড়ো গ্রাম পর্যন্ত কিছুটা এলাকা ফাঁকা। সেখানে কোনও জনবসতি নেই। দু’পাশে শুধুই চাষের জমি।
|
কাঁকসা-মানকর রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র। |
আবার মাড়ো গ্রাম থেকে মানকর ঢোকার আগেও এই রাস্তা প্রায় একই রকম ফাঁকা। দুষ্কৃতীরা মূলত এই দুটো জায়গাকেই হামলা চালানোর জন্য বেছে নিয়েছে। মাড়ো গ্রামের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য রায় বলেন, “দুষ্কৃতীরা প্রথমে সাইকেল ও বাইক আরোহীদের আটকে টাকাপয়সা, মোবাইল ফোন কেড়ে নিচ্ছে। তার পরে রাস্তার পাশের নালাতে তাঁদের হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে পালিয়ে যাচ্ছে।” ছিনতাইবাজদের থেকে রক্ষা পায়নি অ্যাম্বুল্যান্স। মাড়ো গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় রুইদাস জানান, গত ২৪ নভেম্বর তাঁদের ক্লাবের একটি অ্যাম্বুল্যান্স রাত একটা নাগাদ মানকর থেকে এই রাস্তা ধরে গ্রামে ফিরছিল। সেই সময় কয়েকজন মুখে কাপড় বাঁধা দুষ্কৃতী তাঁদের অ্যাম্বুলেন্সটিকে আটকে চালক ও খালাসিকে মারধর করে। তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। ওই ঘটনার পরের দিন তাঁরা বুদবুদ থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।
ওই রাস্তার বেশির ভাগ অংশ গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অর্ন্তগত। ওই পঞ্চায়েত সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। প্রশাসনিক দিক থেকে কী ব্যবস্থা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।” বুদবুদ থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাস্তায় নিয়মিত পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে তল্লাশি চলছে। |