মুখ্যমন্ত্রী আসছেন, নেতাইয়ে রাস্তার কাজ জোর-কদমে
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর আড়াই বছর কেটে গিয়েছে। নেতাই গ্রামের পিচ রাস্তা তৈরির কাজ এখনও শেষ হল না। এ দিকে, আগামী ৭ জানুয়ারি, মঙ্গলবার ‘নেতাই দিবসে’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেলপাহাড়ির আমলাশোল গ্রামে আসছেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নেতাইয়েও মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নেতাই গ্রামে পিচ রাস্তা তৈরির কাজ চলছে এখন। রাতেও কাজ হচ্ছে। রাস্তার কাজ কেমন চলছে তা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে বৃহস্পতিবার নেতাই গ্রামে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “নানা কারণে কাজটা বিলম্বিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে লালগড় থেকে নেতাই গ্রামের শহিদ বেদি পর্যন্ত রাস্তা তৈরির জন্য দিনে রাতে কাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের আগেই আমরা কাজটা শেষ করতে চাইছি।”
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামে সিপিএমের সশস্ত্র শিবির থেকে গুলিচালনার ঘটনায় চার মহিলা-সহ ৯ জন গ্রামবাসী নিহত হন। নেতাই-কাণ্ডকে হাতিয়ার করে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে অভাবনীয় ফল করেছিল তৃণমূল। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাই গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১১ সালের অক্টোবরে ওই রাস্তাটি (লালগড় ব্লক সদরের বাঘাকুলি থেকে নেতাই হয়ে ডাইনটিকরি পর্যন্ত ৬ কিমি) পিচের করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

তৈরি হচ্ছে পিচের রাস্তা। নেতাই গ্রামে দেবরাজ ঘোষের ছবি।
২০১২ সালের এপ্রিলে লালগড়ে এক প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে নেতাইয়ের তরুণী জনতা আদক মঞ্চে উঠে জানান, রাস্তার কাজ শুরুই হয়নি। ওই ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশ দেন আমলাদের। এরপর মুখ্যমন্ত্রী রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হবে বলে জনতাকে আশ্বস্ত করেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় রাস্তাটি পাকা করার কাজ শুরু করতে বছর গড়িয়ে যায়। প্রথমে ওই রাস্তার কাজের টেন্ডারে কেউ অংশ নিতে চাননি। পরে কলকাতার একটি সংস্থা কাজের বরাত নেয়। ২০১২ সালের মাঝামাঝি রাস্তার কাজ শুরু হয়। কাজের বরাতপ্রাপ্ত মূল সংস্থাটি আবার অন্য একটি সংস্থাকে রাস্তার কাজটি করার দায়িত্ব দেয়। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায়, দ্বিতীয় সংস্থাটির পরিকাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে। কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন নেতাইবাসী। গত ২০ ডিসেম্বর বকেয়া টাকার দাবিতে নেতাই গ্রামের রাস্তা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই সংস্থার লোকজনকে ঘেরাও করেন একদল মালমশলা সরবরাহকারী। অভিযোগ, ওই সংস্থাটি স্থানীয় সরবরাহকারীদের বহু টাকা বকেয়া রেখেছিল। এরপর কাজের বরাতপ্রাপ্ত মূল সংস্থাটি আগের সংস্থাটিকে বাদ দিয়ে অন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন সংস্থাটি গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু করেছে। ৬ কিমি রাস্তাটির জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। আপাতত, মুখ্যমন্ত্রী জুজুতে ৩ কিলোমিটার (লালগড় থেকে নেতাই শহিদ বেদি) রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। আর বাকি ৩ কিমি? পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলছেন, “পরে বাকি অংশেরও কাজ হবে।”
নেতাই গ্রামের ভিতরে রাস্তাটি চওড়া করার জন্য দু’পাশের বাড়িঘর ও দোকানের কিছু অংশ ভাঙা হয়েছে। লালগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণগোপাল রায়ের বাড়ি নেতাই গ্রামে। কৃষ্ণগোপালবাবুর কথায়, “অবশেষে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হতে চলেছে, নেতাই দিবসের আগে এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.