‘স্থপতি মোদের স্থাপনা করেছে বরভূধরের ভিত্তি/ শ্যাম কম্বোজের ওঙ্কারধাম মোদেরই প্রাচীন কীর্তি’—সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতায় শ্যাম দেশের (বর্তমানে মায়ানমার) সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক যোগাযোগের প্রতিফলন দেখা গেল শিলচর গুরুচরণ কলেজে।
বুধবার ‘থাই-ইন্ডিয়া কালচারাল এক্সচেঞ্জ’ অনুষ্ঠান হল ওই কলেজে। ব্যাঙ্ককের চন্দ্রকাসেম রাজাভাট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা তিনটি নাচ প্রদর্শন করেন। পরে, গুরুচরণ কলেজের শিল্পীরা মঞ্চে ওঠেন। গণেশ বন্দনা, বাউল নাচের পর শুরু হয় লোকনৃত্য ধামাইল। ‘আমি কী হেরিলাম জলের ঘাটে গিয়া’অনুষ্ঠান দেখে উচ্ছ্বসিত থাই শিল্পীরা। লোকনৃত্য শেষ হওয়ার পর তাঁরা বলেন, ‘ছন্দটা থেমে গেল!’ পরে, তাঁদের অনুরোধে ফের একই নৃত্য হল। ব্যাঙ্ককের ছাত্রীরাও উঠে এলেন মঞ্চে। থাই-ভারতের শিল্পীরা এক সঙ্গে ধামাইল নাচলেন। পরে, বিহু নাচেও অংশ নেন দু’দেশের শিল্পীরা।
ভারতে নিযুক্ত মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত থারাডল থাংলে শিলচর ও ব্যাঙ্ককের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ে গুরুত্ব দেন।
পড়শি দেশের সঙ্গে এ অঞ্চলের পুরনো সম্পর্ক। তাম্রলিপ্ত (পশ্চিমবঙ্গের তমলুক) ও চম্পা (বিহারের ভাগলপুর) বন্দর থেকে বাংলার বণিকরা শ্যামদেশ-সহ সুবর্ণভূমিতে নৌ-বাণিজ্যে যেতেন। সেই সূত্রেও দুই অঞ্চলের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ছিল। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি সমরকান্তি রায়চৌধুরী বলেন, “এ রাজ্যে বসবাসকারী তাই-আহোমরা থাইল্যান্ড থেকেই এসেছিলেন। তখন দেশটির নাম ছিল ‘সিয়াম’। সে থেকেই শ্যাম। পরে ১৯৩৫-এ থাইল্যান্ড নামকরণ হয়। এখন তা মায়ানমার নামে পরিচিত।”
গবেষক-অধ্যাপক অমলেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখানে যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হল। মনসামঙ্গল কাব্যে সুবর্ণভূমিতে ভারতের নৌ-বাণিজ্যের উল্লেখ মেলে। রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় এবং নরেশচন্দ্র মজুমদারের বইয়েও তা লেখা হয়েছে। বাণিজ্যই দুই দেশকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।’’
মায়ানমারের সাংস্কৃতিক দলটি এসেছিল শিলচর বাণিজ্যমেলায়। ব্যবসায়ীরা চুড়ি-মালা-সহ সে দেশের বিভিন্ন জিনিসের দোকান দিয়েছেন। সাংস্কৃতিক দলটি মেলায় নিজেদের অনুষ্ঠান পরিবেশন করছে। এরই ফাঁকে কাল তাঁরা গিয়েছিলেন গুরুচরণ কলেজে।
দুই ছাত্র-সহ কলেজ পড়ুয়ার ওই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন চন্দ্রকাসেম রাজাভাট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা থানারিয়া চামপলাং। তিনিও বলেন, “নতুন ভাষা বোঝা-শেখা কম সময়ে সম্ভব নয়। কিন্তু নাচের মধ্যে দিয়ে সেই দুরত্ব মুছে গেল!”
|
অবস্থার ওঠানামা সুচিত্রার |
সুচিত্রা সেনের শারীরিক অবস্থার কখনও উন্নতি হচ্ছে, কখনও অবনতি। বুধবার রাতে তাঁর অবস্থা কিছুটা উদ্বেগজনক ছিল। শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল। বেড়ে গিয়েছিল নাড়ির গতিও। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন চিকিৎসকেরা। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে অবস্থার অনেক উন্নতি হয়। চিকিৎসকেরা জানান, মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরানো থাকলেও নায়িকা এ দিন তিনি উঠে বসেন। চিকিৎসক ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। স্বাভাবিক খাবার খান মুখ দিয়েই। ফলে অনেকটা চাপমুক্ত হয়েছেন ডাক্তারেরা। ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর মধ্য কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন সুচিত্রা। হৃৎস্পন্দনের গতি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় রবিবার রাতে তাঁকে আইটিইউ-এ পাঠানো হয়। |