ধসার আক্রমণে নষ্ট হতে বসেছে প্রায় ৩০০ হেক্টরের আলু। কৃষি দফতরের পরামর্শে ওষুধ দিয়েও ধসার আক্রমণ সমলানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ চাষিদের। ২০১০-এ ধসার আক্রমণে বিঘার পর বিঘা আলু নষ্ট হয়েছিল। কোচবিহার জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) বলরাম দাস বলেছেন, “বাজার থেকে কেনা বীজ থেকেই ওই ধসা রোগ ছড়িয়েছে। যে বীজ কেনা হয়েছিল তা শোধন করা ছিল না। পুরো বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধসা ছড়ানো আটকাতে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে সে বিষয়ে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।” কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, লিফলেট বিলি করে কৃষকদের সর্তক করার কাজ শুরু হয়েছে। কৃষি দফতরের অনুমোদিত দোকানের বীজ কিনতে বলা হয়েছে।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার যে ভূমিকা নেয়, ধসা রুখতে সেই রকম ভূমিকা কেন নেওয়া হয় না? জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, জেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমির উপরে আলু চাষ করা হয়। এর মধ্যে কোচবিহার সদর ও তুফানগঞ্জে সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। এই দুই মহকুমায় ধসা ছড়িয়েছে। তুফানগঞ্জে বেশি। মহকুমার ধলপল ১ পঞ্চায়েতে শিকদারেরখাতায় ধসা ছড়িয়েছে। সেই সঙ্গে নাককাটি-গছ সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও ধসা ছড়িয়েছে। কোচবিহার-২ ব্লকে ঢাংঢিংগুড়ি, বড় রাংরস, বাউদিয়ার কুঠি, মাষানকুড়া এলাকার আলু ক্ষেতেও ধসার প্রকোপ শুরু হয়েছে। মাষানকুড়ার সুবাস দাস বলেন, “সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। পুরোটায় ধসা লেগেছে। ধূপগুড়ির একটি দোকান থেকে বীজ কিনে নিয়ে এসে চাষ করেছিলাম। কৃষি দফতরের পরামর্শ মেনেই চাষ করেছি। ২০১০-এ ব্যাপক ক্ষতি হয়, এ বারেও তেমন আশঙ্কা করছি।”
বাউদিয়ার কুঠির বিশ্বনাথ ওঁরাও, বড় রাংরসের কানু বর্মন, সুবল বর্মনেরা বিশ্বনাথ বলেন, “আবহাওয়া খারাপ হলে এবং বীজ খারাপ হলে আলুতে ধসা হয়। বীজ খারাপের জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। যে দোকান থেকে বীজ কিনেছি সেগুলি শোধন করা ছিল বলে জানানো হয়। তার পরেও এমন হলে কী করব?” সাধারণত, শীতের আগে এবং শীতের সময় আলু দুই বার চাষ করা হয়। প্রথম দফায় আলু অক্টোবর মাসের শেষে বা নভেম্বরের শুরুতে চাষ করা হয়। ৫২ থেকে ৬০ দিনের মাথায় ওই আলু তুলে নেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় আলু চাষ শুরু হয় ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। এ বারে প্রথম দফার আলু চাষেই ধসার আক্রমণ শুরু হয়েছে। কৃষক বিশ্বনাথবাবু বলেন, “উৎপাদন ঠিক হলে রোজগার ভাল হয়। কিন্তু যা অবস্থা কতটুকু আলু বাঁচাতে পারব বুঝতে পারছি না।” |