ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে ঠাঁই পেল মোগলমারির বৌদ্ধবিহার
ত দিন যা ছিল খবরের শিরোনামতা এ বার জায়গা করে নিল পাঠ্যপুস্তকে। ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে মোগলমারিতে আবিষ্কৃত বৌদ্ধবিহার অন্তর্ভুক্ত করল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই পুরাস্থলের অজানা কিছু ‘টুকরো কথা’ থাকছে ‘অতীত ও ঐতিহ্য’ নামের দেড়শো পাতার পাঠ্যপুস্তকটিতে। প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার প্রসঙ্গে (১১৩ নম্বর পাতায়) অধুনা আবিষ্কৃত এই বৌদ্ধবিহার নিয়ে ছোট্ট নিবন্ধ রয়েছে বইয়েযেখানে নালন্দার সমসাময়িক বৌদ্ধবিহারটি এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ‘আবিষ্কৃত’ সবচেয়ে বড় ‘বৌদ্ধ প্রত্নস্থল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রয়াত অধ্যাপক অশোক দত্তের নেতৃত্বে ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দাঁতনের মোগলমারির সখীসেনা ঢিবিতে ছ’দফায় খননকাজ চালিয়ে আবিষ্কার হয় প্রাচীন ‘বৌদ্ধবিহারে’র সীমানা পাঁচিল, প্রদক্ষিণ পথ, প্রবেশদ্বার। এ ছাড়াও স্ট্যাকো (চুন, মার্বেল গুঁড়ো ও বালির মিশ্রণ) অলঙ্কৃৃত দেওয়াল, স্ট্যাকো নির্মিত ১৪টি মূর্তি, ৪২ রকমের কারুকার্যে মোড়া ইট, পোড়ামাটির কিছু বাসনপত্র, ২০টি উৎসর্গ ফলক উদ্ধার হয়। গত ২০ নভেম্বর থেকে আবার রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ এই বৌদ্ধস্তুপটির খনন ও সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। পুরাস্থলটির কাছেই ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পুরাতত্ত্ব বিভাগ সংগ্রহশালা তৈরি করবে বলে ঠিক হয়েছে।
ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতি চর্চার প্রসঙ্গে টুকরো কথায় মোগলমারি। —নিজস্ব চিত্র।
এরই মধ্যে নতুন বছরে পর্ষদের পাঠ্যপুস্তকে মোগলমারি জায়গা করে নেওয়ায় উচ্ছ্বসিত দাঁতনবাসী। স্থানীয় তরুণ সেবা সঙ্ঘের সম্পাদক গৌরিশঙ্কর মিশ্র, যুগ্ম সম্পাদক অতনু প্রধান বলেন, “আমরা এই ইতিহাস উন্মোচনের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছি। মোগলমারি নিয়ে আমাদের আলাদা সেন্টিমেন্ট। নতুন প্রজন্মও এই ইতিহাস জানবে শুনে ভাল লাগছে। এত তাড়াতাড়ি বিষয়টিকে পাঠ্যক্রমে জায়গা দেওয়ার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ধন্যবাদ।” হাতে না পেলেও মোগলমারি সিলেবাসে আছে শুনে খুশি পড়ুয়ারা। সদ্য ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠা স্থানীয় পুঞ্জা এলাকার নেকুড়সুনি বিবেকানন্দ বিদ্যাভবনের ছাত্র স্নেহাশিস দে-র কথায়, “আমি তো ওই বৌদ্ধবিহারের বিষয়ে অনেকটাই জানি। শুনছি আমাদের বইয়েও নাকি থাকবে মোগলমারির কথা। কী লেখা আছে জানার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।”
উল্লেখ্য, এত দিন ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পাঠ্যপুস্তকের জন্য সর্বশিক্ষা মিশন থেকে টাকা দিয়ে দেওয়া হত স্কুলে-স্কুলে। পাঠ্যসূচি নির্দিষ্ট থাকলেও এক-একটি বিদ্যালয়ে এক-এক রকমের বই পড়ানো হত। এই শিক্ষাবর্ষ থেকে সেই রীতি তুলে দিয়ে রাজ্যের প্রতিটি বিদ্যালয়ে ওই তিনটি শ্রেণির সমস্ত পাঠ্যপুস্তক পর্ষদ বিতরণ করবে বলে ঠিক হয়েছে। সেই মতো নতুন বইগুলি ইতিমধ্যে স্কুলে-স্কুলে পৌঁছে গিয়েছে। আজ, নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনটিকে ‘বই দিবস’ ঘোষণা করে ওই দিনই সমস্ত বই বিলি করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দফতর।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সঙ্ঘমিত্র মাকুড় বলেন, “জেলা থেকে সে ভাবে কোনও প্রস্তাব পাঠানো হয়নি। তবে স্থানীয় ইতিহাস গুরুত্ব পাওয়াটা ভাল খবর। জেলার ইতিহাস পাঠ্যবইতে জায়গা করে নেওয়ায় গর্ব হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.