পিকনিকে যাওয়ার পথে উল্টোদিক থেকে আসা একটি লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল তিন জনের। গুরুতর আহত হলেন সাত জন। তাঁরা সকলেই বরাবাজার এলাকার বাসিন্দা। বুধবার সকালে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের উপর পুরুলিয়া মফস্সল থানার ডুমুরডি গ্রামের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন রাখাল কুম্ভকার (২৪), মহেন্দ্র সিংহ বাবু (২৫) ও অসীম রুইদাস (২৩)। দুর্ঘটনায় জখম সাত জনকে বোকারোয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত অন্য একজনকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বরাবাজারের রাইডি-বেড়াদা গ্রাম থেকে দু’টি গাড়িতে করে ঝাড়খণ্ডের পাঞ্চেত জলাধারে পিকনিক করতে যাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। দু’টি গাড়ি সামনে-পিছনে যাচ্ছিল। প্রতিটি গাড়িতে দশ-এগারো জন করে ছিলেন। পুরুলিয়া শহর ছাড়িয়ে রঘুনাথপুর রাস্তা ধরার কিছু পরেই সকাল সওয়া আটটা নাগাদ ডুমুরডি গ্রামের অদূরে সামনে থাকা গাড়িটির সঙ্গে উল্টোদিক থেকে আসা গ্যাসের সিলিন্ডার বোঝাই একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে আহত যুবক উত্তম কুম্ভকার বলেন, “উল্টোদিক থেকে একটা ট্রাক আসছিল। তারপর কী হল মনে নেই।” বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রতুল মাহাতো বলেন, “হত-আহতদের সকলেই প্রায় দুঃস্থ পরিবারের। ওঁদের কয়েকজনের কাছে শুনলাম, রাস্তায় তখন সামান্য কুয়াশা ছিল। ছোট বাঁকের কাছে সামনের একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা ট্রাকের মুখোমুখী হয় বরাবাজারের এই গাড়ি।”
দুর্ঘটনার পরে বাসিন্দারা দৌড়ে যান। অন্য গাড়িতে থাকা বাকি লোকেরা তাঁদের নিয়ে উদ্ধারে নেমে পড়েন। আহতদের দ্বিতীয় গাড়িতে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাখাল কুম্ভকারকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। সেখানেই মারা যান মহেন্দ্র সিংহ বাবু। পরে বোকারোয় নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় অসীম রুইদাসের। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আহতদের বেশির ভাগেরই মাথায় চোট রয়েছে। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “ওই দুর্ঘটনা ছাড়া জেলার সর্বত্র এ দিন নির্বিঘ্নেই পর্যটকেরা পিকনিক করেছেন। যান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ মোতায়েন করা ছিল।” |