পিকনিকে গিয়ে দুর্ঘটনা, মৃত ৭
বরটা পাওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তবু একটা ক্ষীণ আশা ছিল, সবার দেহ তো মেলেনি। এক জনও কি বাঁচবে না?
নতুন বছরের প্রথম দিনেই এল সেই দুঃসংবাদ। চার বন্ধুর কেউই বেঁচে নেই! পিকনিকে গিয়ে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির গাংদোয়া জলাধারে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। বছরের শেষ দিনে গাংদোয়া জলাধারের পাড়ে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা, আট জন যুবক। বিকেলে চার জন পাড়ে বেঁধে রাখা একটি নৌকা নিয়ে জলাধারে নেমে পড়েন। খানিকটা গিয়ে নৌকা উল্টে যায়। তলিয়ে যান চার জনই। কিছু ক্ষণ পরে শৌভিক সিংহ মজুমদার (২৬) নামে এক যুবকের দেহ ভেসে ওঠে। অন্ধকার নেমে আসায় বাকিদের খোঁজ করতে পারেনি পুলিশ।
জলে নিথর। গঙ্গাজলঘাটির গাংদোয়া জলাধারে ডুবে যাওয়া দুর্গাপুরের
এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। বুধবার অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।
বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়। দু’টি বোটে বাঁকুড়ার জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা জলাধারে নামেন। ঘণ্টা তিনেক পরে ডুবে যাওয়া নৌকাটির হদিস মেলে। তার মিনিট ৪৫ পরে একে একে রাজু মান্না (২৭), উৎপল মণ্ডল (২৬) ও রিন্টু সেনের (২৮) দেহ তোলা হয়। রাজু, উৎপলদের সঙ্গে আসা সঞ্জীব কুণ্ডুর দাবি, “আমরা ফেরার তোড়জোড় করছিলাম। কয়েক জন মাঝি পর্যটকদের জলাধারে নৌকাভ্রমণে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার চার বন্ধুও সে ভাবেই মাঝি নিয়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার পরে মাঝি সাঁতার কেটে পাড়ে উঠে পালিয়ে গিয়েছে।” বাঁকুড়ার জেলশাসক বিজয় ভারতী অবশ্য বলেন, “আমি রিপোর্ট পেয়েছি, ওই চার যুবক পাড়ে বাঁধা একটি নৌকা নিজেরাই জলাধারে নিয়ে গিয়েছিলেন। কোনও মাঝি ছিলেন না। নৌকার হালও খারাপ ছিল।”
ধান্ডাবাগের উৎপল মণ্ডলের দেহ
ফেরার পরে ভিড়। ছবি: বিকাশ মশান।
থমথমে শৌভিক সিংহ
মজুমদারের বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
শৌভিকের বাড়ি এমএএমসি কলোনির বি-ওয়ান মোড়ে। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিলেন তিনি। ধান্ডাবাগে বাড়ি পেশায় কেটারিংয়ের ব্যবসায়ী উৎপলের। আমরাইয়ের বাসিন্দা রিন্টুর আলমারির দোকান আছে। পেশায় ঠিকাশ্রমিক রাজু ছিলেন ভিড়িঙ্গির স্কুলপাড়ার বাসিন্দা। চার পাড়াতেই শোকের ছায়া নেমেছে। প্রতিবেশীরা সকাল থেকেই ভিড় করেছিলেন চার বন্ধুর বাড়িতে।
নতুন বছরের প্রথম দিন পিকনিকের পথে দুর্ঘটনায় আরও তিন যুবকের মৃত্যু হয়েছে পুরুলিয়ায়। গুরুতর আহত সাত জন। পুলিশ সূত্রের খবর, বরাবাজারের রাইডি-বেড়াদা গ্রাম থেকে দু’টি গাড়িতে করে ঝাড়খণ্ডের পাঞ্চেত জলাধারে পিকনিক করতে যাচ্ছিলেন জনা ২০-২২ যুবক। পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে পুরুলিয়া মফস্সল থানার ডুমুরডি গ্রামের কাছে সামনের গাড়িটির সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা গ্যাসের সিলিন্ডার বোঝাই একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়।
শোকস্তব্ধ রাজু মান্নার
পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
রিন্টু সেনের দেহ পৌঁছনোর অপেক্ষায়
দেশবন্ধুনগরের বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পিছনে থাকা পিকনিকের অন্য গাড়িটির সওয়ারিরা উদ্ধার কাজে হাত লাগান। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় মৃতেরা হলেন রাখাল কুম্ভকার (২৪), মহেন্দ্র সিংহ বাবু (২৫) ও অসীম রুইদাস (২৩)। আহত সাত জনকে ঝাড়খণ্ডের বোকারোয় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই সংক্রান্ত খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.