১ জানুয়ারি, নতুন বছরের প্রথম দিন বিদ্যুৎ সংযোগ পেল হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবন দ্বীপভূমির পাটঘরা, শ্রীধরকাঠি, কানাইকাঠি ও কাঁঠালবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা।
বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে মোট ৯টি পঞ্চায়েত। সাহেবখালি নদীর এক পারে ৪টি পঞ্চায়েত এলাকায় অনেক আগেই বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ হয়েছিল। বাকি ছিল নদীর অন্য পাড়ে সুন্দরবন লাগোয়া দুলদুলি, সাহেবখালি, যোগেশগঞ্জ, গোবিন্দকাটি, কালীতলা এই পাঁচটা পঞ্চায়েতের ৭৫টি গ্রাম। এমনিতেও ওই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ২০০৯ সালে আয়লার পরে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি বোঝা যায়। বছর খানেক আগে রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুৎ প্রকল্পে খুঁটি পোঁতার কাজও শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যে ওই এলাকায় ১১ হাজার ৫০০টি খুঁটি পোঁতাও হয়েছে। বসানো হয়েছে ৬৮টি ট্রান্সফর্মার। নদী পার করে তার নিয়ে যেতে বসেছে ৪টি বড় টাওয়ার। তিন মাস আগে প্রথম দফায় দুলদুলি পঞ্চায়েতের মঠবাড়ি গ্রামে বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় বলে সংস্থা সূত্রের খবর।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে গ্রামে শিবির করে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছ থেকে ফর্ম জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে দু’হাজারের উপর পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ করেছেন। ধাপে ধাপে তাঁদের প্রত্যেককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে বলে সংস্থা সূত্রের খবর। বিদ্যুৎ নিতে বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে কোনও টাকা দিতে হবে না।
বিদ্যুৎ আসায় স্বভাবতই খুশি এলাকার মানুষ। কানাইকাটি গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী মনিকা হালদার, কমলা মণ্ডলেরা বলেন, “বিদ্যুতের অভাবে এত দিন প্রসূতিদের খুবই কষ্ট সহ্য করতে হত। ফ্রিজ না থাকায় ইঞ্জেকশন সংরক্ষণ করা যেত না। এখন সেই সমস্যা কাটল।”
হিঙ্গলগঞ্জ বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক আলমগীর শেখ বলেন, “এখানে কোনও সেতু নেই, নদী পার করেও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য তার থেকে আরম্ভ করে অন্যান্য উপকরণ নিয়ে যাতায়াত করা অসম্ভব। তাই বিদ্যুত সংযগের কাজে দেরি হয়েছে। তবে দুলদুলি ও সাহেবখালি পঞ্চায়েতের অধিকাংশ এলাকাতে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জানুয়ারির মধ্যে বাকি পঞ্চায়েতগুলি ও সুন্দরবনের কুড়েখালি লাগোয়া কালীতলা পঞ্চায়েত পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়ে যাবে।”
বসিরহাট উৎসব। শুরু হল অষ্টম বর্ষের ‘বসিরহাট উৎসব’। চলবে আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী-সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন চিত্রশিল্পী সুধীর সরকার। উপস্থিত ছিলেন বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন, জেলা পরিষদের সদস্য গোলাম শেখ-সহ বিশিষ্টজনেরা। এ বারের মেলায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর থাকছে শতাধিক স্টল। স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন উৎসবের উদ্যোক্তারা। শীতের ঠান্ডা গায়ে মেখে উৎসবের আমেজে ভাসছেন বসিরহাটবাসী। |