|
|
|
|
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬ হাজার বাড়ির জন্য বরাদ্দ জেলায়
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গত অক্টোবরে বন্যায় যাঁদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। শীঘ্রই তা বিলির কাজও শুরু হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের সাহায্যের জন্য বরাদ্দ মোট ৩৭ কোটি ৭০ লক্ষ ২৪ হাজার ৬০০ টাকা ইতিমধ্যে রাজ্য থেকে জেলায় চলে এসেছে। জেলা থেকে সেই টাকা ব্লকগুলিতেও পৌঁছতে শুরু করেছে। ব্লক থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদী জেলা প্রশাসন। দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের জেলা আধিকারিক সত্যব্রত হালদার বলেন, “ক্ষতিপূরণের টাকা চলে এসেছে। দ্রুত তা বিলি হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতির জেরে জেলায় সবমিলিয়ে ৫৬ হাজার ৫৬৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৬১১টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ৩৯ হাজার ৯৫৩টি। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য প্রথমে ব্লক স্তরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি হয়। পরে সেই তালিকা জেলা প্রশাসনের হাতে আসে। ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনও হয়। তারপর রাজ্য সরকারের কাছে সেই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সরকার সেই তালিকা অনুমোদনও করে। ঠিক হয়েছে, সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য ১৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অন্য দিকে, যাঁদের বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ৩ হাজার ২০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সেই মতো ক্ষতিপূরণ বাবদ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য ২৪ কোটি ৯১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১২ কোটি ৭৮ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা।
এক নাগাড়ে বৃষ্টি ও জলাধার থেকে প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে গত অক্টোবরে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ২৭টি ব্লকে কমবেশি দুর্যোগের প্রভাব পড়ে। এরমধ্যে ১১-১২টি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলের তোড়ে বেশ কয়েকটি বাঁধ ভাঙায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এক সময়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ১০৪টি ত্রাণ শিবির খুলতে হয়। বহু মানুষ এই সব শিবিরে আশ্রয় নেন। বন্যা পরিস্থিতির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমান প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। সরেজমিনে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখতে জেলায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বস্তুত, সেই সময়ই রাজ্য সরকার জানিয়ে ছিল, বন্যায় যাঁদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পূর্বের সেই ঘোষণা মতোই অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
আগামী এক মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছয় কি না, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|