পৌষ মেলা, দোল-সহ নানা সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, বহু বিদেশি পর্যটক আসেন বোলপুরে। অথচ রেল স্টেশনে যাওয়া-আসার মূল ফটক এবং ভিআইপি গেটের মাঝে যত্র তত্র আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। জড়ো করা আবর্জনার পাশেই রয়েছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার এবং একটি টেলিফোন বুথ। তাই বোলপুর মডেল স্টেশন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটকেরা।
এই মডেল স্টেশন চত্বরের দু’পাশে রয়েছে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা। অভিযোগ, শৌচাগার থাকলেও নজরদারির অভাবে অনেকে দুই গেটের মাঝের জায়গা নোংরা করেন। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা তথা তথ্য প্রযুক্তি কর্মী মনীষা মুখোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সোনালি সিংহ-এর কথায়, “কয়েকশো মানুষ এই রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াত করেন। ট্রেন ধরতে ভিআইপি গেট দিয়ে মেয়েদের কার্যত মুখ লুকিয়ে যেতে হচ্ছে। অথচ আরপিএফ এবং জিআরপি ফাঁড়ির দশ মিটারের মধ্যে এই ঘটনা দিনের পর দিন ঘটছে। একটু নজরদারি করলে অনায়াসে ফাঁকা জায়গায় দিনের শৌচকর্ম বন্ধ করা যায়।” টেলিফন বুথের মালকিন শিলা বাগদি এবং এটিএমের নিরাপত্তাকর্মী সুবীর চট্টোপাধ্যায়, পান দোকানি তোতন দেবানাথ, বোলপুর উকিলপট্টি এলাকার বধূ সীমা অধিকারী, শিক্ষক নুরুল হক বলেন, “সুবিধা অসুবিধাতে এই বুথ থেকে ফোন করা বা রিচার্জ করা হয়। এটিএম থেকে টাকা তোলেন বহু মানুষ। দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট মানুষজনদের আনাগোনা লেগেই থাকে। অথচ স্টেশন চত্বরে ঢুকলেই দুর্গন্ধে টেকা যায় না। স্টেশন কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক।” |
স্থানীয় ট্যাক্সি সংগঠন থেকে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি অবিলম্বে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, “দ্রুত যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সে জন্য স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।” জেলা রেলযাত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তমাল চক্রবর্তী বলেন, “বোলপুর একটি মডেল স্টেশন। অথচ স্টেশন চত্বর এবং আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিৎ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানাব।” দূষণ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লিখিত ভাবে বোলপুর পুরসভায়ও জানিয়েছেন। পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে স্টেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্টেশন ম্যানেজার প্রণবকুমার সিংহ অবশ্য দাবি করেন, “যে জায়গায় আবর্জনা জমে থাকে বলে বলা হচ্ছে, ওই জায়গা সপ্তাহে তিন দিন পরিষ্কার করা হয়। কীটনাশকও স্প্রে করা হয়। স্টেশন চত্বরের বাইরে একটি শৌচাগার করার জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। সেটি হয়ে গেল আশা করছি সমস্যা আর থাকবে না।” |