পড়ল কে, কুয়ো ঘিরে দিনভর তোলপাড় পাড়া
চমকা একটা বিকট আওয়াজ।
শব্দ শুনে বাড়ির মালিক বাইরে বেরিয়ে দেখলেন পাতকুয়োর উপরের টিনের ঢাকনা ভেঙে নীচে পড়ে আছে। আর দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে এক দল বাচ্চা ছেলে, কিছুক্ষণ আগেই যারা ওই কুয়োর পাশে খেলছিল।
তা হলে কি পাতকুয়োয় পড়ে গেল কেউ? এই প্রশ্নকে ঘিরেই দুপুর থেকে তোলপাড় হল বালির রাজচন্দ্রপুর। কিন্তু পাতকুয়ো কাটার মিস্ত্রি ডেকে বা ডুবুরি নামিয়েও মিলল না কারও সন্ধান। এমনকী দমকল কর্মীরা জল তুলতে তুলতে ক্লান্ত হয়ে পড়লেও কাউকেই পাওয়া গেল না ভিতরে। শেষে সন্ধ্যা নামতে রণে ভঙ্গ দিলেন পুলিশ থেকে শুরু করে এলাকাবাসীরা।
তখন দুপুর ১টা। রাজচন্দ্রপুরের বড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা বিরজু মণ্ডলের বাড়ির পিছন দিকের পাঁচিলের উপর দিয়ে ঘুড়ি ধরার জন্য দৌড়োদৌড়ি করছিল একদল কচিকাঁচা। প্রত্যেকেরই বয়স ছয় থেকে বারো। তারা যেখানে খেলছিল সেখানেই ছিল বিরজুবাবুদের পাতকুয়ো। দুপুর বেলা আচমকা ভারী কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে চমকে ওঠেন বিরজুবাবুর স্ত্রী। পাতকুয়োর পাশে যারা খেলছিল, তাদের দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখে উচ্চস্বরে কাঁদতে শুরু করেন তিনি। চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমাদের পাতকুয়োয় কেউ পড়ে গিয়েছে।’
খবর রটে যায় গোটা এলাকায়। ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। নিশ্চিন্দা থানায় খবর গেলে চলে আসেন পুলিশ কর্মীরাও। এরই মধ্যে এক মহিলা ওই পাতকুয়োর কাছে এসে কাঁদতে শুরু করে দেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছেন না। সেও নাকি সকালে খেলতে বেরিয়েছিল। আর তাতেই উত্তেজনা আরও বাড়ে। ডেকে আনা হয় পাতকুয়ো মিস্ত্রিদের। বালতি, কাঁটা নামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। কিন্তু কিছুই মেলে না। অগত্যা নীচে নামেন মিস্ত্রিরা। তাতেও কারও সন্ধান মেলেনি। তখনও কুয়োর সামনে বসে কেঁদে চলেছেন ওই মহিলা। হঠাৎ খবর আসে বাড়ি ফিরে এসেছে তাঁর ছেলে। সে খেলতে গিয়েছিল, ঘুড়ি ধরতে বেরোয়নি। তখন দুপুর দু’টো।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। তারাও কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। তখনই পুলিশ ঘোষণা করে ছেলেমেয়েরা ঘরে আছে কি না প্রত্যেক বাসিন্দাকে তা দেখে জানাতে হবে। জানা যায়, সমস্ত ছোট ছেলেমেয়েরা বাড়িতেই রয়েছে। তাহলে পাতকুয়োয় পড়ল কে? এ নিয়েই জটলা শুরু হয়ে যায় গোটা এলাকায়।
কিন্তু এলাকায় তো কারও নিখোঁজ হওয়ার খবর নেই। পাতকুয়োতেও কাউকে দেখা যাচ্ছে না। এতএব দমকলকর্মী, ডুবুরি ফিরে যেতে চাইলেও বাধ সাধলেন স্থানীয়েরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। এর মধ্যেই স্থানীয়েদের দাবি মতো পাতকুয়োর জল তুলতে শুরু করে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে তখন সন্ধ্যা। পাতকুয়োর জলও প্রায় শেষ ততক্ষণে। কিন্তু ভিতরে তখনও কারও দেখা মিলল না।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.