শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ পেয়ে পুলিশি টহল শুরু হয়েছিল। বর্ষশেষের রাতে টহলদারি হালকা হতেই দুষ্কৃতীরা ফের হানা দিল! কড়েয়া থানা এলাকার ব্রড স্ট্রিট ও রাইফেল রেঞ্জ রোডের সংযোগস্থলে ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। ওই দিন রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ লেক গার্ডেন্সের বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর সঙ্গে কড়েয়ায় শ্বশুরবাড়িতে ফিরছিলেন তরুণী গৃহবধূ। বাড়ির সামনে অটো থেকে নামতেই চার যুবক তাঁদের ঘিরে ধরে। মহিলার অভিযোগ, “ওরা আমাকে লক্ষ্য করে অশ্লীল কটূক্তি করতে থাকে। আমার হাত ধরে টানাটানি করে। আমার
স্বামী প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করে।” চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে
বাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে আসেন মহিলার শ্বশুরমশাই। তখন দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়।
ঘটনার কথা জানিয়ে সেই রাতেই কড়েয়া থানায় শ্লীলতাহানি, মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন দম্পতি। অভিযোগের তদন্তে নেমে সাজিদ নামে এক যুবককে গ্রেফতারও করে কড়েয়া থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে সোমবার থেকে তাঁদের বাড়ির সামনে পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান ওই মহিলা। পরের দিন কড়েয়া থানা থেকে তাদের জানানো হয়, বর্ষশেষের অনুষ্ঠানের জন্য রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশ দিতে হবে। তাই মঙ্গলবার রাতে তাঁদের বাড়ির সামনের নিরাপত্তা একটু হালকা করা হবে। তবে পুলিশি নজরদারি থাকবে। গৃহবধূর স্বামীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত এগারোটা নাগাদ তিনি আর তাঁর ভাই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। জনা পাঁচেক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক হাজির হয়ে তাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়, মারধর করে। ভদ্রলোকের বাবা ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাঁর গায়েও হাত তোলে তারা। হইচই শুনে পাড়ার কয়েক জন চলে আসেন। তখন অবশেষে পালায় তারা। এই ঘটনার পর থানায় ফের অভিযোগ দায়ের করেছে ওই পরিবারটি।
এ ব্যাপারে লালবাজারের এক পদস্থ কর্তার বক্তব্য, মহিলার অভিযোগ পাওয়ার পরে এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে ওই বাড়িতে আলাদা করে কোনও পুলিশ পিকেট বসানো হয়নি। মঙ্গলবার ফের গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই কড়েয়া এলাতেই গত বছর নববর্ষের দিনে মারা যান প্রতিবাদী যুবক আমিনুল ইসলাম। পাড়ার দু’টি মেয়েকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন আমিনুল। পুলিশ সে কথা না শুনে তাঁর বিরুদ্ধেই ডাকাতির মামলা আনে বলে অভিযোগ। ২০১২-র ডিসেম্বর মাসে এ ঘটনার প্রতিবাদে নিজের গায়ে আগুন দেন আমিনুল। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি তিনি মারা যান। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে সম্প্রতি বেকসুর খালাস পেয়েছে মূল অভিযুক্ত শাহজাদা। |