কল্পতরু উৎসব ও মেলায় নতুন বছর শুরু শিল্পাঞ্চলে
কোথাও বইমেলায় উপচে পড়ছে ভিড়, আবার কোথাও হরেক জিনিসের মেলার মধ্যে বিজ্ঞান প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে পড়ুয়ারা। নতুন বছরের প্রথম দিনে নানা উৎসবে রঙিন হয়ে উঠল শিল্পাঞ্চলের নানা এলাকা।
বিভিন্ন জায়গার মতো বুধবার দুর্গাপুর ও আসানসোল শিল্পাঞ্চলে পালিত হয় কল্পতরু উৎসব। এই উপলক্ষে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সারা দিন ধরে চলে বিশেষ পুজো, হোম, আরতি, ভক্তিগীতি। উৎসব উপলক্ষে দুর্গাপুরের সাধুডাঙ্গার শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ভোরে মঙ্গলারতি দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সারা দিন ধরে ভাগবত পাঠ, ধর্মালোচনা। ছিল কীর্তন, ভজন, পংক্তিভোজন। গ্যামন ব্রিজ সংলগ্ন মাঠেও এ দিন থেকে শুরু হয়েছে কল্পতরু উৎসব ও মেলা। চলবে ১০ দিন। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনে দিনটি উপলক্ষে বিশেষ পূজা অর্চনার আয়োজন করা হয়েছিল। সন্ধ্যায় বিশেষ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন স্বামী ভারূপানন্দ।
কথিত আছে, ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি শ্রীরামকৃষ্ণদেব অসুস্থ থাকাকালীন কাশিপুর বাগানবাড়িতে ভক্তদের কাছে ‘কল্পতরু’ রূপে ধরা দিয়েছিলেন। তখন তিনি সবাইকে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন, “তোমাদের চৈতন্য হোক।” তারপর থেকে প্রতি বছরই ভক্তরা বছরের প্রথম দিনে কল্পতরু উৎসব পালন করেন। কল্পতরু উৎসবের সঙ্গেই শিল্পাঞ্চলের নানা প্রান্তে চলা মেলাগুলিতেই বছরের প্রথম দিন ভিড় উপচে পড়ে।
গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে জামুড়িয়ার বোরিংডাঙা উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে ও বিদ্যাসাগর মেলা কমিটির পরিচালনায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চলছে মেলা। এ দিন ছিল এই মেলার শেষ দিন। মেলার প্রতিটি দিনই বিভিন্ন মনীষীর নামে উৎসর্গ করা হয়েছিল। শেষ দিনে মেলাটি পালিত হয় ‘দ্বিজেন্দ্রলাল দিবস’ হিসাবে। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা অভিনয় করেন ‘চোখে আঙুল দাদা’ নাটক। মেলার প্রথম দিনটি ‘বিদ্যাসাগর দিবস’ হিসাবে পালিত হয়েছিল। সে দিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি মূর্তির উদ্বোধন করেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। এ ছাড়াও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাবা ও মা-র মূর্তিরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ওই দিন। উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত ও অরুণাভ বড়ুয়া। বছরের প্রথম দিনে মেলাতে প্রচুর ভিড় হয়েছিল। উদ্যোক্তা সংস্থার পক্ষে পূর্ণশশী রায় জানান, ১৯ বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছিল।
এক দিকে যখন মেলা শেষ হল, তখন অন্য দিকে মেলা শুরু হল। বছরের প্রথম দিনে পাণ্ডবেশ্বরে অজয় নদের ধারে শিশু ও বিঞ্জান মেলার উদ্বোধন করলেন বর্ধমান জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। শুরুর দিন থেকেই জমে উঠেছে এই মেলা। শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এই মেলা চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলায় স্কুল পড়ুয়ারা নানা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। লাগোয়া বীরভুম থেকেও বেশ কিছু কৃষক উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য নিয়ে এসেছেন এখানে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই মেলা এ বছর ২১ বছরে পা দিল।
অন্য দিকে ২৭ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে রানিগঞ্জ বইমেলা। এই বইমেলা এ বছর ২৩ বছরে পড়ল। স্থানীয় শিশুবাগান মাঠে এই মেলার উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক অমর মিত্র। মেলায় প্রতি দিনই থাকছে নানা অনুষ্ঠান। মেলার শেষ দিন আজ, ২ জানুয়ারি। রানিগঞ্জের পুরপ্রধান অনুপ মিত্র জানান, এই মেলা প্রথম শুরু হয়েছিল সীতারামজি ভবনে। রানিগঞ্জ সাংস্কৃতিক সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে শুরু হওয়া এই মেলা কয়েক বছর চলার পরেই রানিগঞ্জ পুরসভা এবং পঞ্চায়েত সমিতি নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়। সীতারামজি ভবন থেকে রেল মাঠ, বাসস্ট্যান্ড মাঠ, চিনকুঠি মাঠ ঘুরে এ বার শিশুবাগান মাঠে আয়োজিত হল এই মেলা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.