দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা নিয়েও দ্বন্দ্বে জড়াল তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। একই কার্যালয়ে দু’বার পতাকা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ হল দুর্গাপুরে।
বুধবার সকালে বিধাননগরের ভ্যামবে কলোনিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দলের পতাকা তোলা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। প্রথমে শুরু হয় বচসা। তার পর হাতাহাতি। জখম হন দুই গোষ্ঠীর দু’জন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিবাদমান দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টিকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে স্বীকার করেননি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলীয় কার্যালয়ে এ দিন সকালে দলীয় পতাকা উত্তোলন করে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভীম মণ্ডল। তিনি ও তাঁর অনুগামীরা পতাকা তুলে চলে যাওয়ার কিছু পরে সেখানেই আবার দলের পতাকা তুলতে যান দলের অন্য গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত নিখিল মুখোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীরা। সেই সময় কয়েক জন এসে তাঁদের বাধা দিলে শুরু হয় গণ্ডগোল। আহত হন এলাকায় নিখিলবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত হৃদয় সাঁই ও ভীমবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত সুকান্ত মাজি। দু’জনকেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সুকান্তবাবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল চত্বরেও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা বাধে। পুলিশ গিয়ে তাদের হঠিয়ে দেয়।
তৃণমূল নেতা ভীমবাবুর অভিযোগ, “আমাদের তোলা পতাকা নামিয়ে নতুন করে পতাকা তোলার চেষ্টা করছিল কয়েক জন। তখন আমাদের ছেলেরা বাধা দেয়।” নিখিলবাবু অবশ্য সেই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “বেশ কয়েক জন সমাজবিরোধী এসে আমাদের উপরে চড়াও হয়। আমাদের এক সমর্থকের মাথা ফেটে যায়।” তাঁর আরও দাবি, “যারা হামলা করেছে তারা বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকার সময়ে সিপিএম করত। এখন তৃণমূলের নাম ব্যবহার করে নানা রকম দুষ্কর্ম করে।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভীম মণ্ডল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই এলাকায় দলের দুই গোষ্ঠী এর আগেও বিবাদে জড়িয়েছে। দলের গোষ্ঠী রাজনীতিতে ভীম মণ্ডল বরাবরই দলের প্রাক্তন জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা বর্তমানে আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। নিখিল মুখোপাধ্যায় দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা, দুর্গাপুরের মেয়র ও বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। প্রভাতবাবু অবশ্য এ দিনের ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “আমি শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বে আছি। দলের মূল সংগঠনের ব্যাপার নিয়ে কোনও কথা বলব না।” অপূর্ববাবু বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। কোনও রকম গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।” পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |