লোকসভা নির্বাচনের আগে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করার দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামল কংগ্রেস। গত সোমবার রায়গঞ্জে ওই আন্দোলনের সূচনা করেন উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। ওই দিন মোহিতবাবুর নেতৃত্বে দলের কয়েক হাজার কর্মী এবং সমর্থক রায়গঞ্জের জেলখানা মোড় থেকে শিলিগুড়িমোড় পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রাস্তায় মহামিছিল করেন। মিছিল থেকে সারদা কান্ডে সিবিআই তদন্তের দাবিও তোলা হয়।
কংগ্রেসের অন্দরে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদ, একাধিক পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখতেই নতুন করে আন্দোলন শুরু করা হচ্ছে। মোহিতবাবু বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করছেন না। এক বছর আগে চাষিরা মহাকরণ অভিযান করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা লিখিত ভাবে জানাতে গিয়েছিলেন। ওই দিন তিনি চাষিদের সঙ্গে দেখা করেননি।” তিনি জানিয়েছেন, রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্বপ্নের হাসপাতাল গড়ে তুলতে সাংসদ দীপা দাশমুন্সির নেতৃত্বে উত্তর দিনাজপুর জেলার নয়টি ব্লকে কংগ্রেস পর্যায়ক্রমে আন্দোলন শুরু করছে।
২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ৮২৩ কোটি টাকা বরাদ্দে রায়গঞ্জে ১০০ একর জমিতে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করে। তবে হাসপাতাল তৈরির জন্য রাজ্যকে জমি দিতে হবে বলে কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল রায়গঞ্জের পানিশালা এলাকায় চিহ্নিত করা জমি পরিদর্শন করে। কিন্তু এরপর বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আটকে যায়। তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক স্বার্থে হাসপাতালের জমি অধিগ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ তুলে দীপাদেবীর নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস।
এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার কৃষিজমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির বিরোধী। মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করার হলে রায়গঞ্জে একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করতেন না। তাই লোকসভা নির্বাচনের মুখে রাজনৈতিক স্বার্থেই কংগ্রেস অপপ্রচার শুরু করেছে।”
|