সম্পর্কের নতুন দরজা খুলে মমতায় মুগ্ধ বশির
লকাতার আতিথেয়তায় মুগ্ধ তিনি। সেই উষ্ণতা সঙ্গে নিয়েই ফিরেছেন দিল্লি। কলকাতার মিষ্টি দই-এর প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ। কিন্তু তাঁকে সবচেয়ে বেশি ছুঁয়ে গিয়েছেন যিনি, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠককেই তাঁর পশ্চিমবঙ্গ সফরের সবচেয়ে ইতিবাচক ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করছেন ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সলমন বশির। তাঁর কথায়, “শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, বাণিজ্য, সামাজিক ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে একটি নতুন দরজা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হল।”
নবান্নে গিয়ে কালই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পক্ষ থেকে মমতাকে সে দেশে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বশির। এর আগে বিহারের প্রাক্তন এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ এবং নীতীশ কুমারকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের দেশে নিয়ে গিয়েছেন পাক নেতৃত্ব। সাধারণত, কোনও রাষ্ট্রের অঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে বাইরের দেশ সরাসরি কূটনৈতিক গাঁটছড়া বাঁধতে পারে না। এ ক্ষেত্রেও বিদেশ মন্ত্রককে জানিয়ে প্রোটোকল মেনেই মমতার কাছে গিয়েছিলেন বশির। তখনই তাঁকে পাকিস্তানে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
এলগিন রোডের বাড়ি থেকে এই গাড়িতেই শেষ বারের মতো চলে যান সুভাষচন্দ্র।
মঙ্গলবার নেতাজি ভবনে এসে সেই গাড়ির সামনে সস্ত্রীক পাকিস্তানের হাইকমিশনার
সলমান বশির। সঙ্গে কৃষ্ণা বসু সুগত বসু। মঙ্গলবার। ছবি: দেবাশিস রায়।
কিন্তু এ বার লক্ষ্যণীয় ভাবে কিছুটা তাড়াহুড়ো দেখা গিয়েছে পাকিস্তানের তরফে। আর এটাকেই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখছেন কূটনীতিকদের একাংশ। তাঁদের ব্যাখ্যা, শীঘ্রই বশিরের দিল্লির রাষ্ট্রদূতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁর জায়গায় যিনি আসবেন, তিনি কলকাতা সফরে যেতেই পারতেন। কিন্তু ভারতে যে হেতু ভোট এগিয়ে আসছে, তাই মমতর সঙ্গে বৈঠকটি দ্রুত সেরে নিতে চেয়েছেন পাক নেতৃত্ব। কেন না ভোটের মুখে পাক দূত রাজ্যে গেলে বিতর্ক তৈরি হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। এ সব মাথায় রেখেই যাওয়ার আগে ভারতে সম্ভবত শেষ সফরটি সেরে ফেললেন সলমন বশির।
পশ্চিমবঙ্গের কাছে পৌঁছনোর জন্য কীসের ব্যস্ততা ইসলামাবাদের?
সূত্রের বক্তব্য, পাক নেতৃত্ব ভারতের অন্যান্য বড় শহরে সফর করলেও বরাবরই অবহেলিত থেকেছে কলকাতা। নওয়াজ শরিফ নিজে পঞ্জাবের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। তিনি ক্ষমতায় আসার পরই ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করার কথা বলেছিলেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশাল বাজার এখনও অধরাই রয়ে গিয়েছে পাক-পঞ্জাবের ব্যবসায়ীদের কাছে। বিষয়টি পাকিস্তানের নেতাদের মাথায় রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সন্ত্রাসের প্রশ্নে যখন ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক তিক্ত, তখন সাংস্কৃতিক দৌত্য তথা ‘সফট ডিপ্লোম্যাসি’ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন নওয়াজ। ভারতকে পাশে না-রাখতে পারলে দেশের অর্থনীতিকে যে চাঙ্গা করা সম্ভব নয়, সেটা বিলক্ষণ বোঝেন তিনি।
বশিরের সফরসঙ্গী পাক দূতাবাস কর্তা মনজুর আলি মেমনের কথায়, “বৈঠক খুবই ভাল হয়েছে। পাকিস্তানের মানুষ ও সরকারি নেতৃত্বের প্রতি ইতিবাচক বার্তা দেন মমতা।” ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, জাতীয় গ্রন্থাগারও ঘুরে দেখেন তাঁরা। গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করেন। দেখা করেছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গেও।
সামনেই নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০% সংখ্যালঘু ভোট। রাজনৈতিক অনেকেই মনে করছেন, বশিরের সঙ্গে বৈঠক করা, তাঁকে সরকারি আতিথ্য দেওয়ার মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। নওয়াজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কবে তিনি পাক সফরে যাবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.