আমেরিকা ও ব্রিটেনের পরে এ বার পাকিস্তান! গত বছর মে মাসে এসেছিলেন আমেরিকার তৎকালীন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন। এ বছর নভেম্বর মাসে দেখা করে গিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে গেলেন ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত সলমন বশির। এক সময় পাকিস্তানের বিদেশসচিব ছিলেন তিনি। সোমবার নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বশির। এর পরে কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “পাকিস্তান ও সে দেশের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের আলাদা গুরুত্ব আছে। পশ্চিমবঙ্গের নেতৃত্বকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।” মমতাকে পাকিস্তানে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন বশির। মমতা তাতে আগ্রহও দেখিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বশির। |
সাংবাদিক সম্মেলনে সলমন বশির। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র। |
এর আগে হিলারি ক্লিন্টন ও ডেভিড ক্যামেরনও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে গিয়েছেন মমতার। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে একই সুর ছিল পাক রাষ্ট্রদূতেরও। দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ নবান্ন গিয়েছিলেন তিনি। প্রায় আধ ঘণ্টা মমতার সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। সে প্রসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে বশির বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁরা জনসাধারণের জন্য দারুণ উল্লেখযোগ্য কাজ করছেন। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আমাদের আগ্রহ আছে। এখানে ভাল সম্ভাবনাও আছে।” পাশাপাশি বশির জানান, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও সে দেশের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছেন।
মমতা সম্পর্কে অনেক কিছু বললেও নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে নীরব থাকেন পাক রাষ্ট্রদূত। জানতে চাওয়া হয়েছিল, আগামী বছর ভারতে সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মোদী। তিনি নির্বাচনে জয়লাভও করতে পারেন। বিষয়টিকে তাঁরা কী ভাবে দেখছেন? বশির বলেন, “এটি অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তা ছাড়া কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দল সম্পর্কে মন্তব্য করা সমীচীন নয়।” বিষয়টিতে ইতি টেনে তাঁর মন্তব্য, “আমরা সব দলের সব নেতাকে সম্মান করি।” যদিও এরই পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দেন, কোনও দেশের সরকার বদল হলেই নীতির বদল হয় না।
এর পরেই জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের মৌলবাদী নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির পরে পাক পার্লামেন্টে কেন নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া হল কেন? কাদের মোল্লার ফাঁসিও তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়! পাক রাষ্ট্রদূতের জবাব, “পার্লামেন্ট একটি সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান। কাজেই তারা কী করবে না করবে, তা তারাই ঠিক করবে। এ নিয়ে আমার মন্তব্য করা সাজে না।”
বশির এ দিন জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে পাক বাণিজ্যসচিব আগামী মাসে ভারতে আসবেন। |