বাস মালিকরা যতই আন্দোলন করুন না কেন, ভাড়া বাড়ানোর কোনও ভাবনাই যে সরকারের মাথায় নেই তা সোমবারই জানিয়ে দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তাঁর এই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের বাস মালিকদের সব ক’টি সংগঠন একযোগে জানিয়ে দিল, ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে সোমবার, ৬ জানুয়ারি রাজ্যের কোথাও বেসরকারি বাস রাস্তায় নামবে না। পরিবহণমন্ত্রীর বক্তব্য, “ধর্মঘটের রাস্তা এখন কলকাতায় ভুল পথ। ওঁরা ভুল পথেই যাচ্ছেন। সরকার তার দায়িত্ব পালন করবে। ওই দিন রাস্তায় যাতে বাস থাকে, তার ব্যবস্থাও করবে সরকার।”
মদনবাবু সোমবার দাবি করেছেন, বাস চালিয়ে মালিকদের মোটেও লোকসান হয় না। মন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বাস মালিকরা এ দিন জানান, দফায় দফায় জ্বালানির দাম বাড়ছে। বাড়ছে যন্ত্রাংশের দামও। কিন্তু তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাসের ভাড়া বাড়ছে না। ৬ তারিখ প্রতীকী ধর্মঘট ডেকে রাজ্য সরকারের মনোভাব শেষ বারের মতো বুঝে নিতে চান বাস মালিকরা। তাঁদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার এর পরেও ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত না নিলে ১০ জানুয়ারি বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলি বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
পুজোর আগে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে সে সময়ে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কালীপুজোর পরে বাসের ভাড়া নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় বাস মালিকরা গত ২৩ ডিসেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ও পরিবহণমন্ত্রীর কাছে ভাড়া বাড়ানোর লিখিত দাবিও পেশ করেন। তাঁদের দাবি, মদনবাবু মন্ত্রিগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার পরে ভাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই বৈঠক হয়নি। ফলে কোনও সিদ্ধান্তও নেওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ৬ তারিখের বাস ধর্মঘটের কথা জানিয়ে জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারের জন্য অপেক্ষা করেছি। সরকার বলেছিল, ভাড়া বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে কালীপুজোর পরে সিদ্ধান্ত নেবে। নেয়নি। উল্টে বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের আন্দোলন স্থগিত করতে বলে। এ বার বাধ্য হয়ে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হল।” ২০-২১ অক্টোবর যে বাস ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল, তাতে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট অংশ নেয়নি। এ বার তারাও যোগ দিচ্ছে। এই সংগঠনের নেতা দীপক সরকার বলেন, “পরিবহণ শিল্পে এখন ভয়ঙ্কর সঙ্কটের সময় চলছে। আমরা এক জায়গায় থেকে লড়াই চালাচ্ছি।” |