ফেরার এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল কিছু গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ কালিয়াচক থানার মজমপুরের এই ঘটনায় হামলাকারীরা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। হামলায় তিন পুলিশ অফিসার -সহ পাঁচ পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে খুনের অভিযোগ -সহ ১৮টি মামলায় অভিযুক্ত ফেরার আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পোলা শেখ নামে ওই ফেরার অভিযুক্তকে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিল। এদিন সকালে পুলিশ জানতে পারে, মজমপুরে ঠকটুলি গ্রামের একটি চায়ের দোকানে পোলা শেখকে দেখা গিয়েছে। কালিয়াচক থানার অফিসার অভিষেক তালুকদারের নেতৃত্বে একটি পুলিশ দল মজমপুরে গিয়ে পোলাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, তাকে জিপে তোলার পরেই প্রায় হাজারখানেক গ্রামবাসী তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। পুলিশ অফিসারেরা জানান, এরপর গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তারপরেই পোলাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাধা দিলে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে মারধর শুরু করে। পুলিশকর্মীরা কোনওক্রমে একটি গাড়ি নিয়ে এলাকা থেকে বেরিয়ে আসেন। হামলায় সাব ইন্সপেক্টর অভিষেকবাবু, এএসআই রাম সাহা ও রসময় পাল জখম হয়েছেন। তাঁদের ইসলামপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
মজমপুর গ্রামের বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, কয়েকদিন আগে এই গ্রামের এক ব্যক্তিকে দুষ্কৃতীরা খুন করে। পুলিশ সেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারছে না। উল্টে মিথ্যা মামলায় অভিযুক্তকে ধরে গ্রামে ঢুকে অত্যাচার শুরু করেছিল পুলিশ। সে কারণেই গ্রামবাসীদের একাংশ ক্ষেপে গিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়।
এ দিন বিকেলে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার ফুরফুরাশরিফেও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার হাতে মার খেতে হল পুলিশকর্মীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, মোটরবাইক চোর সন্দেহে মারধর করা হচ্ছিল একই পরিবারের চার জনকে। তাঁদের উদ্ধার করতেই গিয়েছিলেন স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা। তখনই ভাঙচুর করা হল পুলিশের গাড়ি। গাড়ির চালককেও বেধড়ক মারধর করা হয়। তবে মোটরবাইক চোর সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। যদিও এ দিনই সন্ধ্যায় মোটরবাইকটির মালিকের বাড়ি থেকেই সেই গাড়ি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এসডিপিও (শ্রীরামপুর ) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |