ঠিক এক বছর আগে এসেছিলেন। আবারও আসবেন বলে জানিয়েছেন।
তার আগেই প্রাক্তন ছাত্রের সম্মানে বর্ষবরণের রাতে খুশিতে মাতল পুরুলিয়া সৈনিক স্কুল। মঙ্গলবারই দেশের নতুন বায়ুসেনা-প্রধান হয়েছেন এই স্কুলের প্রাক্তনী অরূপ রাহা। তাই আক্ষরিক অর্থেই খুশির বাতাবরন স্কুলে। সৈনিক স্কুলের অধ্যক্ষ বি এস ঘোরপোড়ের কথায়, “এটা আমাদের কাছে শুধুই আনন্দের খবর নয়, গর্বেরও।” তাই মঙ্গলবার ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁতেই নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিলিতে মেতে ওঠেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সহ সমস্ত ক্যাডেট। অধ্যক্ষ বলছেন, “এর চেয়ে আনন্দের বর্ষবরণ ক্যাডেটদের ও আমাদের কাছে আর কী হতে পারে!” |
গত বছর স্কুলে অরূপ রাহা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র। |
এই স্কুলেরই ছাত্রাবাস ‘পটেল হাউস’-এর ১৬৮ রোল নম্বরের ছাত্র অরূপ রাহাও এক দিন এ ভাবেই স্কুলের বর্ষবরণ-সহ নানা উৎসবে যোগ দিতেন। সেই সময়ে তাঁর সহপাঠী শ্যামল পাল (বর্তমানে পুরুলিয়ার বাসিন্দা) বলছিলেন, “আমাদের সহপাঠী আজ বায়ুসেনার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিচ্ছে, এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। তখনই দেখেছিলাম নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত ক্ষমতা ওর ছিল। বন্ধু হিসেবে এখনও যোগাযোগ রয়েছে।” পটেল হাউসের বর্তমান আবাসিক, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নির্ঝর দত্তর কথায়, “উনি আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিলেন, ভাবতেই গর্ব হচ্ছে।” স্কুলের এই প্রাক্তনী ঠিক এক বছর আগে বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন স্কুলে।
দিনটা ছিল ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি। অধ্যক্ষ বলেন, “অরূপবাবু সে দিন সারা দিন কাটিয়ে গিয়েছিলেন স্কুলে।” সে সমস্ত ছবি লাগানো হয়েছে স্কুলের বোর্ডে। স্কুলের রিসেপশনের দেওয়ালে দেশের তিন বাহিনীর প্রধানদের ছবি টাঙিয়ে রাখাই রীতি। অধ্যক্ষ জানালেন, মঙ্গলবার রাতে তাঁরা এখানে অরূপ রাহার ছবি লাগাবেন। হবে নাই বা কেন? পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনও প্রাক্তনী বায়ুসেনার সর্বোচ্চ পদে বসেছেন! এই মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখতে আজ, বুধবার সকালে স্কুলে বসছে ‘স্পেশ্যাল অ্যাসেম্বলি’। অধ্যক্ষের কথায়, “নিয়মিত আমাদের ক্যাডেটদের এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই অ্যাসেম্বলিতে আমাদের প্রাক্তন এই ছাত্রের কথা আলোচিত হবে। যাতে বর্তমান ক্যাডেটরা উদ্বুদ্ধ হয়।”
স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে ১৯৬৫ সালে অরূপবাবু পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলে যোগ দেন। তখন স্কুলের অবস্থান ছিল বর্তমান রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের কাছে বোঙাবাড়িতে। ১৯৬৬-তে স্কুল উঠে আসে পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে মাগুড়িয়ায়, রাঁচি রোডের ধারে। ১৯৭০ সালে তিনি স্কুল থেকে পাশ করে বেরিয়ে যান। অধ্যক্ষ বলেন, “আমরা ওঁকে স্কুলে আসার অনুরোধ করেছি। উনি এখন খুবই ব্যস্ত। তবে আসবেন বলে কথা দিয়েছেন।” স্কুলের সমস্ত ক্যাডেট ও কর্মী এখন সেই দিনেরই অপেক্ষায়। |