নবান্নের চোদ্দোতলার জানলা দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে দূরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎক্ষণাৎ তিনি দমকলমন্ত্রী জাভেদ খানকে ফোন করে জানতে চান, কোথায় আগুন লেগেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়ে মন্ত্রী তাঁর দফতরের সব কর্তাদের ফোন করে বিষয়টি জানতে নির্দেশ দেন। তড়িঘড়ি খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাওড়ার ফোরশোর রোডে এক চটকলে আগুন লেগেছে। তা থেকেই ধোঁয়া।
এ দিনের ওই আগুনে পুড়ে যায় ফোরশোর রোডের ফোর্ট উইলিয়াম চটকলের একটি অংশ। হাওড়া, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও দমকলের সদর দফতর থেকে ১৬টি ইঞ্জিন গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। খবর পেয়ে মন্ত্রী, আমলা, পুলিশকর্তা এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা চলে আসেন ঘটনাস্থলে।
পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, পৌনে ১টা নাগাদ চটকলের ব্যাচিং অয়েল বিভাগে (যে বিভাগে তেল দিয়ে চটকে মসৃণ করা হয়) আগুন লাগে। সেখানে সাতটি ট্যাঙ্কে ২০০০ লিটার তেল ছিল। তাতেই আগুন ছড়াতে শুরু করে। চটকলের নিজস্ব অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। এর মধ্যেই যায় দমকল। আগুন অবশ্য চটকলের অন্য বিভাগে ছড়ায়নি। |
কিন্তু আগুনে চটের স্তূপ দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় আশপাশ। চটকলের এক কর্তা শিবদাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সে সময়ে প্রায় ১১০০ কর্মী কাজ করছিলেন। ব্যাচিং বিভাগেও কর্মীরা ছিলেন। কিন্তু কেউ হতাহত হননি। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে দমকল জানিয়েছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন। তবে চটকলের নিজস্ব অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা থাকার জন্যই বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন দমকলকর্মীরা।
এ দিন খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে চলে আসেন দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান ও মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ রায়। দু’জনেই দাঁড়িয়ে থেকে বিষয়টি দেখভাল করেন।
এ ছাড়াও আসেন দমকলের ডিজি দুর্গাপ্রসাদ তারানিয়া, এডিজি গোপাল ভট্টাচার্য, হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে-সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন মেয়র রথীন চক্রবর্তীও। দমকলমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীই প্রথম খবরটা দেন। তার পরেই আমি দফতরকে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিই।” |