|
|
|
|
দলছুট জঙ্গি পুলিশি আশ্রয়ে, অভিযোগ কেএলও নেতার
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি
৩১ ডিসেম্বর |
অসমের বহু বিতর্কিত গদাপাণি পাঠক হত্যাকাণ্ডে এ বার অসম পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন কেএলও-র সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ কোচ। তাঁর দাবি, ঘটনার প্রধান নায়ক খগেন রায় ওরফে রাজা ওরফে রমেশ বর্মন ও তার সঙ্গী, পিওন বর্মণ ওরফে বীরবল পুলিশের চর ছিল। দলের নির্দেশ ছাড়াই তারা অসমের কৃষি বিভাগের দুই কর্তা, গদাপাণি পাঠক ও ফয়জুল ইসলামকে অপহরণ করে। অপহরণের সময়েই পাঠককে হত্যা করে তারা। পরে পিওন ও খগেন দল ছেড়ে পুলিশের আশ্রয়ে চলে যায়। পিওনকে পরে কেএলও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য হত্যা করে। একই ভাবে খগেনকেও চরম শাস্তি দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে কেএলও। খগেন এখন পুলিশ রিজার্ভেই রাজার হালে রয়েছে বলে কোচের দাবি।
২০১২ সালের ২ মে বঙাইগাঁও জেলায় কাজ সেরে ফেরার পথে কৃষি বিভাগের ইঞ্জিনিয়র গদাপাণি পাঠক ও ফয়জুল ইসলামের গাড়ি থামায় জঙ্গিরা। পাঠক পালাবার চেষ্টা করলে তাকে গুলি করে মারা হয়। বেশ কয়েকদিন পরে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান ফয়জুল।
এই ঘটনার জেরেই অসমে সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে কেএলও। অবশ্য তার আগে-পরে বহু অপহরণ, তোলাবাজি, গুলিচালনার ঘটনায় কেএলওর নাম জড়িয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে সিআইডি হিরণ্য রায়, প্রদীপ রায়, পিওন বর্মন-সহ ১০ জন কেএলও জঙ্গি ও লিংকম্যানকে গ্রেফতার করে। কৃষি বিভাগের কিছু কর্মীও অপহরণের এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে তদন্তে ইঙ্গিত ছিল। তদন্তকারী এক অফিসার জানান, “এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ছিল কেএলও-র সেনাধ্যক্ষ নিত্য সরকার ও খগেন রায়। এরা গ্রেফতার হয়নি। পুলিশের খাতায়, পিওন ও খগেন দু’জনই চিরাং জেলার বাসুগাঁওয়ের বাসিন্দা। নিত্য ধুবুরির লোক।” কৈলাশ জানান, পিওন ও খগেন দু’জনেরই বাড়ি কোকরাঝাড়ের শালাকাটি।
গোয়েন্দাদের বক্তব্য: নিত্য সরকার বর্তমানে নেপালের ঝাপা জেলায় কেএলও সদর দফতর ও মায়ানমারের প্রশিক্ষণ শিবির, চিরাং-ধুবুরি শিবির ও বাংলায় কেএলও কর্মকাণ্ডের মূল পাণ্ডা তথা যোগসূত্র। অসম ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে সে কেএলও-র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি।
কিন্তু খগেন রায় কোথায়? কৈলাশ কোচ ফোনে জানান, “খগেন রায় আত্মসমর্পণ করেনি, গ্রেফতারও হয়নি। অসম পুলিশের কর্তা খগেন শর্মা তাঁদের রাজার হালে, একেবারে পুলিশ রিজার্ভে রেখে দিয়েছেন। পিওন বর্মনও পুলিশের চরের কাজ করছিল। তাকেও পুলিশ গ্রেফতার করার নাটক করেছে। জামিনে বের হওয়ার পর আমরাই তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছি।” জঙ্গি শিবিরে হেকলার-কোচ রাইফেল থেকে গুলি চালাতে থাকা খগেনের ছবিও পাঠায় কেএলও।
তদন্তকারী অফিসাররা জানেন না খগেন রায় কোথায়। কিন্তু অসম পুলিশের ডিজি (সিভিল ডিফেন্স ও হোমগার্ড) খগেন শর্মা বলেন, “খগেনকেও ওরা মেরে ফেলত। ও ভয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হয়। আত্মসমর্পণ করার পরে আপাতত খগেন আমাদের হয়েই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কাজ করছে।” কিন্তু, কৈলাশ কোচের দাবি, অসমে কোনও কেএলও সদস্য কখনওই আত্মসমর্পণ করেনি। পুলিশ সংবাদমাধ্যমকেও এমন কোনও তথ্য আগে জানায়নি। কোচের দাবি, “খগেনের বিশ্বাসঘাতক পরিচয় ফাঁস হবার পরে সে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই শিবির ছেড়ে পালায়। গদাপাণি পাঠক হত্যার আসল অপরাধীকে আশ্রয় দিয়ে সংগঠনের নিরীহ সদস্য ও কোচ যুবকদের উপরে পুলিশ বিস্তর অত্যাচার চালাচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, “অপহৃত অপর ইঞ্জিনিয়ার ফয়জুল ইসলামকে দেখালেই তিনি খগেনকে শণাক্ত করবেন।” |
|
|
|
|
|