জবরদখলের জটে দমদম রোড
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে ধীরে ধীরে সেজে উঠছে কলকাতা। কিন্তু অভিযোগ, শহরের উত্তর-প্রান্তের এক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দমদম রোডের কোনও পরিবর্তন আসেনি কয়েক দশক পরেও। অভিযোগের তির কলকাতা পুরসভা ও দক্ষিণ দমদম পুরসভার দিকে।
বি টি রোড ও যশোহর রোডের সংযোগকারী দমদম রোডের এক প্রান্তে চিড়িয়ামোড়, অন্য প্রান্তে নাগেরবাজার। দমদম স্টেশন এলাকায় লোকাল ট্রেন, মেট্রো ও চক্ররেল থাকায় অসংখ্য মানুষের ভরসা এই রাস্তা। চিড়িয়ামোড় থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার অধীনে। তার পর থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ দমদম পুর-এলাকা।
ওই রাস্তার সর্বত্র ভ্যাট উপচানো আবর্জনা, কোথাও রাস্তার পাশে ডাঁই করে রাখা পরিত্যক্ত রিকশা। ‘নো-পার্কিং জোন’ উপেক্ষা করে দু’ধারে দাঁড় করানো বাস, টেম্পো, ট্যাক্সি। ফুটপাথ থেকে রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত বাজার। ফলত, যানবাহনের রুদ্ধগতিতে নাজেহাল নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের দাবি, যে পথ বাসে পেরোতে ২০ মিনিট লাগার কথা, সেখানে লাগছে দ্বিগুণ সময়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু ব্যবসায়ী ফুটপাথ দখল করে রয়েছেন। রাস্তার কোথাও দিনের পর দিন পড়ে থাকছে ইট, বালি, পাথর।
এলাকাবাসী ও নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ না করেও তাঁদের পরিধি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু অভিযোগ, সেই চেষ্টাটুকু কোনও দিনই হয়নি। নিয়ম করে মাঝেমধ্যে হকার সরানো হয়েছে মাত্র। কিছু দিন পরেই ফিরে এসেছে সেই চেনা ছবি।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় দুই পুর প্রশাসনের কর্তারাও। কলকাতা পুরসভার পূর্বতন বাম বোর্ডের এক সদস্যের কথায়, “বড় রাস্তার ভ্যাট তুলে দেওয়া ও ভ্যাট পরিষ্কার শুরু করেছিলাম। তবে ফুটপাথের বাজার তুলে দেওয়া বা তা নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ তখন নেওয়া হয়নি।” দক্ষিণ দমদম পুরসভার স্থানীয় পুর প্রতিনিধি এবং মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল), তৃণমূলের প্রবীর পাল বলেন, “সবটাই আমাদের ব্যর্থতা নয়। ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতাই মূল বাধা। বাসিন্দাদের সহযোগিতায় হনুমান মন্দির এলাকায় ফুটপাথ সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দা শান্তব্রত সিংহ বলেন, “ফুটপাথ সৌন্দর্যায়নের জন্য আমরা একজোট হয়ে পুরসভায় আবেদন করেছিলাম। এক দিকে দাবার গুটি, অন্য দিকে গাছ দিয়ে সাজানো হবে ফুটপাথ। পুরোটাই পুরসভার টাকায়।”
কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি তৃণমূলের ব্রজেন্দ্র বসু বলেন, “দমদম স্টেশনের কাছে কো-অপারেটিভ মার্কেটের পাশের ভ্যাটটি দু’নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। ওই ভ্যাট নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ জমা পড়ছে। সম্প্রতি বরো মিটিংয়ে আমিই বিষয়টি তুলি। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কিছু নির্দেশ আমরা পাইনি।” দমদম রোডের সৌন্দর্যায়ন বা হকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহার বক্তব্য, “প্রশাসনিক সাহায্য বা জরুরি নির্দেশ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে দমদম রোডের বেহাল দশার পরিবর্তন ঘটানো অসম্ভব।” দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পূর্ত) মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “ফুটপাথের হকারদের ছাউনি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। খোলা জায়গায় মাংস বিক্রি করা যাবে না। নির্দিষ্ট জায়গায় বসতে হবে হকারদের। নির্দেশিকাগুলি জারি করা সময়সাপেক্ষ। চাই প্রতিনিয়ত নজরদারি।”
দমদম রোডের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার এই বেহাল দশায় যথেষ্ট বিরক্ত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা দমদম কেন্দ্রের বিধায়ক ব্রাত্য বসুও। তিনি বলেন, “আমি দক্ষিণ দমদম পুরসভার সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেছি। কাজের ক্ষেত্রে ওঁদের যত তৎপর হওয়া উচিত ছিল, তাঁরা ততটা হননি। আমি বিষয়টি নজরে রাখছি। প্রয়োজনে সরকারি হস্তক্ষেপ করাতে উদ্যোগী হব।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.