অগ্নিদগ্ধ গ্রাম থেকে রেংমা উপজাতির দুই মহিলার পোড়া দেহ উদ্ধার হওয়ার জেরে আবারও অশান্ত হয়ে উঠল কার্বি আংলং-এর বোকাজান। পাশাপাশি, কার্বি জঙ্গিদের ভয়ে রেংমা উপজাতির মানুষজনের নাগাল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আজ কার্বি জঙ্গিদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে, নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমায় রেংমারা মিছিল বের করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন লাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও।
গত সপ্তাখানেক ধরেই কার্বি জঙ্গি সংগঠন কেপিএলটি, কার্বি আংলং-এর নাগা-রেংমা উপজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে দফায়-দফায় হানা দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই চারটি গ্রামের শ’খানেক বাড়ি জঙ্গিরা পুড়িয়ে দিয়েছে। জঙ্গিদের গুলিতে মারা গিয়েছেন তিন মহিলা-সহ ৪ জন। জখমের সংখ্যা ৫। গত কাল, জঙ্গিরা বরলাংসো গ্রাম জ্বালাতে এলে পুলিশের সঙ্গে তাদের গুলির লড়াই হয়। রেংমা গ্রামগুলিকে সুরক্ষা দিতে বিরাট পুলিশবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই গত রাতে ফের একটি রেংমা গ্রামের ৯টি বাড়ি জঙ্গিরা পুড়িয়ে দিয়েছে। সকালে, বোকাজানের সাথি গ্রামের পোড়া ঘরগুলি তল্লাশির সময় ঘরের ভিতর থেকে অহিলি রেংমা ও টেংগিলি রেংমা নামে দুই মহিলার দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরেই রেংমা গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও আধা সেনা।
কার্বি জঙ্গিদের হানা থেকে বাঁচতে দলে-দলে রেংমা পরিবার নাগাল্যান্ডে পাড়ি দিচ্ছেন। আজ সকালে কোহিমার ফুলবাড়ি এলাকায় জড়ো হন হাজারখানেক রেংমা গ্রামবাসী। তাঁরা রেংমাদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা দাবি করে মিছিল করেন। নাগাল্যান্ডের রাজ্যপালকে একটি স্মারকলিপিও তাঁরা দেন। ডিমাপুরেও রেংমা উপজাতির মানুষরা কার্বি আংলং-এর ঘটনার প্রতিবাদে একজোট হয়ে মিছিল বের করেন। নাগাল্যান্ডের রাজনৈতিক দলগুলির যৌথ প্রতিনিধিদল বিষয়টি নিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য গুয়াহাটি আসছেন। মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে চিঠিও পাঠিয়েছেন।
|